এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে তিনি দাবি করেছেন, বিজেপি-র ভয় এবং বিভাজনের রাজনীতির শিকার যে সাধারণ মানুষই হচ্ছে, এই ঘটনা তার সবথেকে বড় প্রমাণ৷
পানিহাটি পুরসভা এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মহাজাতি নগর এলাকায় থাকতেন প্রদীপবাবু৷ পেশায় ব্যবসায়ী প্রদীপবাবু তাঁর ভাইয়ের পরিবারের সঙ্গেই থাকতেন৷ এ দিন সকালে ঘুম থেকে না ওঠায় তাঁর ভাইয়ের স্ত্রী প্রদীপবাবুকে ডাকাডাকি করতে থাকেন৷ কিন্তু সাড়া না পাওয়ায় পুলিশে খবর দেওয়া হয় ৷ খড়দহ থানার পুলিশ এসে দরজা ভেঙে প্রদীপবাবুর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে৷
advertisement
প্রদীপবাবুর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর ঘর থেকে একটি ডায়েরি উদ্ধার হয়৷ সেই ডায়েরিতেই এনআরসি নিয়ে নিজের আতঙ্কের কথা লিখে গিয়েছেন প্রদীপবাবু৷ সবশেষে তিনি লিখেছেন, ‘আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী এনআরসি৷’
এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায়৷ মৃত প্রদীপবাবুর বাড়িতে যান রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং পানিহাটির তৃণমূল বিধায়ক নির্মল ঘোষ৷ প্রদীপবাবুর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘৫৭ বছর বয়সী প্রদীপ কর, ৪ মহাজ্যোতি নগর, পানিহাটি, খারদহ (৯ নং ওয়ার্ড) থেকে আত্মহত্যা করেছেন, একটি চিরকুট রেখে গেছেন যেখানে লেখা আছে, “আমার মৃত্যুর জন্য এনআরসি দায়ী।” বিজেপির ভয় ও বিভাজনের রাজনীতির এর চেয়ে বড় অভিযোগ আর কী হতে পারে? ভাবতেই আমার মাথায় আসে, বছরের পর বছর ধরে বিজেপি কীভাবে এনআরসির হুমকি দিয়ে নিরীহ নাগরিকদের উপর নির্যাতন চালিয়েছে, মিথ্যা ছড়িয়েছে, আতঙ্ক ছড়িয়েছে এবং ভোটের জন্য নিরাপত্তাহীনতাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে। তারা সাংবিধানিক গণতন্ত্রকে ভয়ের এক রঙ্গমঞ্চে পরিণত করেছে, যেখানে মানুষকে তাদের অস্তিত্বের অধিকার নিয়ে সন্দেহ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। এই মর্মান্তিক মৃত্যু বিজেপির বিষাক্ত প্রচারণার প্রত্যক্ষ পরিণতি। যারা দিল্লিতে বসে জাতীয়তাবাদ প্রচার করে তারা সাধারণ ভারতীয়দের এমন হতাশার দিকে ঠেলে দিয়েছে যে তারা তাদের নিজের দেশেই মারা যাচ্ছে, এই ভয়ে যে তাদের ‘বিদেশি’ ঘোষণা করা হবে।’
সবশেষে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘দিল্লির জমিদারদের এই কথাটি স্পষ্টভাবে শুনতে দিন: বাংলা প্রতিরোধ করবে, বাংলা রক্ষা করবে এবং বাংলা জয়ী হবে।’
আগরপাড়ার এ দিনের ঘটনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও৷ তিনি বলেন, ‘প্রদীপ করের মৃত্যুর বদলা বাংলার মানুষ ভোটের মাধ্যমে নেবে৷ এই মৃত্যুর জন্য দায়ী অমিত শাহ এবং জ্ঞানেশ কুমার৷’
