তখনও সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম, লালগড় বা নেতাই অনেক দেরি। বামেদের চলে যাওয়া তো দূর অস্ত, আমরা-ওরার মতো পরিস্থিতি তখনও তৈরি হয়নি রাজ্যে। তার অনেক আগে থেকেই কেশপুরে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যাওয়া-আসা। রাজ্যের মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুরের এই এলাকাই প্রথম বিরোধিতার স্বর শুনিয়েছিল। প্রবল পরাক্রান্ত বামেদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। প্রায় ২০ বছর আগে তৃণমূলনেত্রীর বয়স এবং রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাও অতটা ছিল না, যতটা জোশ ছিল।
advertisement
তবুও, দিনের পর দিন কেশপুরে গিয়েছেন মমতা। পড়ে থেকেছেন। কখনও মারও খেয়েছেন। কিন্তু, এক ইঞ্চি জমি ছাড়েননি। প্রবলভাবে আক্রমণের মুখে পড়েছেন তৃণমূল কর্মীরাও। মার খেয়েছেন তাঁরাও। কেউ কেউ খুনও হয়েছেন। তখন তৃণমূলের স্লোগান ছিল, কেশপুরই হবে বামেদের শেষপুর। সেই সময় বামেদের দুর্ভেদ্য ঘাঁটি ছিল কেশপুরে সিপিএমের পার্টি অফিস জামশেদ আলি ভবন। তার নির্দেশেই নাকি এলাকার মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাস চলত। শনিবার, সেখান থেকেই ঢিল ছোড়া দূরত্বে গাড়ি থেকে নেমে পড়েন সেদিনের সেই মার খাওয়া নেত্রী, আজকের মুখ্যমন্ত্রী। আচমকাই মুখ্যমন্ত্রীকে সামনে দেখে ভিড় করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কেউ তাঁর সঙ্গে হাত মেলান। কেউ নমস্কার করেন। কেউ বা ছবি তুলতে শুরু করেন। প্রায় বিশ বছর বাদে বামেদের বিদায় শেষে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই কেশপুরেরই চায়ের দোকানে।
সেদিন তৃণমূল নেত্রীর সেই লড়াই ভোলেনি কেশপুর। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়েও আন্দোলনের ধাত্রীভূমিকে ভোলেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রায় কুড়ি বছর পর ফের কেশপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক বৃত্ত সম্পূর্ণ করলেন তৃণমূল নেত্রী ৷