বাবা-মাকে ঠিক মতো কাছে না পেয়ে তাই অনেক দিন ধরেই মন খারাপ আসানসোলের বাসিন্দা ৫ বছরের ঐতিহ্যের শেষ পর্যন্ত নিজের মন খারাপের কথা মমতা দিদুন-কেই জানাবে বলে ঠিক করল সে৷ যেমন ভাবা তেমন কাজ৷ মাকে বাড়ির কাছে কোনও স্কুলে বদলি করার আবদার জানিয়ে সরাসরি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখেছে ঐতিহ্য দাস৷
advertisement
পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের গোপালপুর এলাকার বাসিন্দা ঐতিহ্য। ঐতিহ্যর বাড়িতে রয়েছে বাবা ও দাদু। বাবা কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা কোল ইন্ডিয়াতে কর্মরত। ঠাকুমা মারা গিয়েছেন বছর দুয়েক আগে। তাই বাড়িতে দাদুর কাছেই থাকতে হয় সারাদিন। সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরেন বাবা। ছুটি পেলে বাড়িতে আসেন মা৷ তাই মাকে বড্ড মিস করে ছোট্ট ঐতিহ্য। মাকে সব সময় কাছে না পাওয়ায় কষ্ট হয় ছোট্ট ঐতিহ্যর।
মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা ছোট্ট ঐতিহ্যর চিঠি৷
সেই আক্ষেপের কথা জানিয়ে খাতার মধ্যে পেন্সিল দিয়ে আবেগঘন একটি চিঠি লিখলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
ছোট্ট ঐতিহ্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে চিঠি দিয়ে দিদুন সম্বোধন করে লিখেছেন “ প্রিয় মমতা দিদুন, আমার নাম ঐতিহ্য দাস, বয়স পাঁচ। আমার বাড়ি আসানসোল। আমার মা উত্তর দিনাজপুর জেলায় প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকা। তাই আমাদের ছেড়ে ওখানে থাকে। অনেকদিন পরপর বাড়ি আসে। আমি বাবা আর দাদুর সঙ্গে বাড়িতে একা থাকি। আমার খুব কষ্ট হয় মাকে ছাড়া, আমি আমার মাকে খুব ভালোবাসি। তুমি তাড়াতাড়ি মাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেবে। আর যেন আমাকে ছেড়ে না যায়”।
ছোট্ট ঐতিহ্যের মা স্বাগতা পাইন জানিয়েছেন, তিনি উত্তর দিনাজপুর জেলায় একটি প্রাইমারি স্কুলে কর্মরত। ২০২১ সালে তাঁর নিয়োগ হয়েছিল রয়েছেন। সেই সময় অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকাকেই বাড়ি থেকে অনেক দূরের স্কুলে নিয়োগ করা হয়। এর পরে অনেকবার বাড়ির কাছাকাছি স্থানান্তরিত করার জন্য আবেদন করেছেন তিনি।
চিঠিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে ঐতিহ্য লিখেছে, প্রিয় মমতা দিদুন, আমার নাম ঐতিহ্য দাস৷ আমার বয়স পাঁচ৷ আমার বাড়ি আসানসোলে৷ আমার মা উত্তর দিনাজপুরের প্রাইমারি দিদিমণি৷ তাই আমাদের ছেড়ে ওখানে থাকে৷ অনেকদিন পর পর বাড়ি আসে৷ আমি বাবা আর দাদুর সঙ্গে বাড়িতে একা থাকি৷ আমার খুব কষ্ট হয় মাকে ছাড়া৷ আমি আমার মাকে খুব ভালবাসি৷ তুমি তাড়াতাড়ি মাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেবে৷ আর যেন আমাকে ছেড়ে না যায়৷ ইতি- তোমার আদরের ঐতিহ্য৷
তিনি আরও বলেন, “আমাদের মুখ্যমন্ত্রী খুবই মানবিক। উনি সর্বক্ষেত্রে নজর রাখেন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস আমরা বাচ্চাদের থেকে দূরে থাকছি, বাবা মায়েরা কষ্ট পাচ্ছে। তাই আমি আশা করব মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মানবিক দিক দিয়ে দেখে আমাদের বাড়ির কাছে স্থানান্তরিত করার ব্যবস্থা করবেন”।
ছোট্ট ঐতিহ্য জানিয়েছে” যদি মমতা দিদুন আমার মাকে বাড়ির কাছাকাছি এনে দিতে পারেন তাহলে আমি ধন্যবাদ জানিয়ে আবার একটা চিঠি লিখব”।