তখন বাবার সেই অংশ দেখার পর থেকেই তৎকালীন স্থানীয় বাসিন্দারা এখানেই বাবার পুজোর শুরু করেন ৷ যা আজ বহরমপুর তথা মুর্শিদাবাদের এক ঐতিহ্য ও ভক্তিপূর্ণ প্রিয় উৎসবের রূপ নিয়েছে৷ ভৈরবের পুজো দিতে ভিড় জমান বহু সাধারণ মানুষ প্রায় ২০ ফুট বা তারও বেশি উচ্চতার এই ভৈরবের পুজো দিতে আসেন স্থানীয় ছাড়াও বহু দূরদূরান্তের ভক্তনার্থী৷ পুজো কমিটির তথ্য অনুযায়ী, ভৈরবের মূর্তি তৈরির খরচ দেওয়ার জন্য আগামী ৪০ বছর পর্যন্ত ভক্তদের নাম নথিভুক্ত হয়ে আছে। এর থেকেই বোঝা যায় বাবা ভৈরবের জনপ্রিয়তা ৷ স্থানীয়রা বিশ্বাস করেন, বাবার কাছে মানত করলে পূরণ হয় ভক্তদের সেই মনস্কামনা ৷
advertisement
আরও পড়ুন : ১২-১৪ ফুটের বিশাল বিশাল মূর্তি নিয়ে শোভাযাত্রা! বেলডাঙার কার্তিক লড়াইয়ে উৎসবের জোয়ার, পর্যটকের ঢল
অন্যদিকে, সৈদাবাদের নিমতলায় বাবা ভৈরবের আরও একটি পুজো হয় যা ‘নিমবাবার পুজো’ নামে পরিচিত ৷ সৈদাবাদের নিমতলার বাসিন্দাদের কাছ থেকে জানা যায়, এই পুজো খাগড়ার বাবা ভৈরবের থেকেও পুরোনো। পাশাপাশি, বহরমপুর শহরের খাগড়া-ইন্দ্রপ্রস্থ এলাকার সুন্দর ভারতী স্কুলের দুই দিকে দুটি ভৈরবের পুজো হয়। এক জনের নাম ‘প্রেমবাবা’। অন্য জনের ‘ডাববাবা’। একদা ভৈরবের পুজোর দিনে ভক্তদের কয়েকজন সুরা পান করেছিলেন কচি ডাবের জল দিয়ে। তারপর উদ্দাম নাচ। সেই থেকে তিনি ডাববাবা। আর ‘প্রেমবাবা’র মানত করলে নাকি প্রেম ব্যর্থ হয় না। স্বাভাবিক নিয়মেই প্রেমিক মানুষ তাঁকে ‘প্রেমবাবা’ বলেই ডাকবেন।
আরও পড়ুন : ফলোয়ার রয়েছে পাকিস্তান, বাংলাদেশে! নামখানায় নিজেই গড়ছেন পাখির বিশাল সাম্রাজ্য, দেখলে মন ভরে যাবে
অন্যদিকে, বান্ধব প্রেসে মোড়ের মহাদেব কেন ‘চিঁড়েবাবা’ তার ব্যাখ্যা না মিললেও তিনি বেশ ‘জাগ্রত’ বলেই এলাকার লোকজন মনে করেন। কোনও এক কালে নাদুস নুদুস ভৈরব ঠাকুরকে দেখে সৈয়দাবাদ-গোয়ালপাড়ায় এক ভক্ত বলে ওঠেন, এ বার আমাদের ভৈরব ঠাকুর দেখতে দারুণ হয়েছে। এক্কেবারে ঝাক্কাস। সেই থেকে লোকমুখে বাবা হলেন ‘ঝাক্কাসবাবা’। কুঞ্জঘাটার কাছে সে বার ভাগীরথী নদীর ভাঙন আটকাতে বোল্ডার ফেলা হয়। সেই থেকে বাবা হলেন ‘বোল্ডারবাবা’।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
পাশাপাশি, বিভিন্ন পুজো উদ্যোক্তাদের মধ্যে ভৈরবের উচ্চতা, গঠনশৈলিতে যেমন বৈচিত্র রয়েছে, তেমনই রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন নামও। এরমধ্যে শহরের অন্যতম প্রাচীন ভৈরবপুজো হল সৈদাবাদ নিমতলাপাড়ার ভৈরব। নিমতলাপাড়ার এই ভৈরব বহরমপুর তথা জেলাবাসীর কাছে নিমবাবা নামে পরিচিত। নিমবাবাকে খুব জাগ্রত বলে মানেন সকলে। মনস্কামনা পূরণের জন্য প্রতি বছর ভক্তরা মানত করেন। ফলে একদিনের এই ভৈরব পুজোর আনন্দে মেতে উঠেছেন বহরমপুর বাসী।





