অনেকের মতে, গঙ্গাসাগরের (Gangasagar) পরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Parganas) এটি-ই সবচেয়ে বড় মেলা। মেলায় ভিড় জমান আশেপাশের গ্রাম থেকে পুরনো জিনিসে আগ্রহী মানুষজন। এমনকি দূর-দূরান্ত থেকে আসা সৌখিন মানুষজনও এই মেলায় আসেন এন্টিক জিনিসের খোঁজে। মেলায় আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহারের যাবতীয় জিনিসপত্র সবই পাওয়া যায়। তবে কোনটাই নতুন নয়, সবই সেকেন্ড হ্যান্ড গোত্রের। ইলেকট্রনিক গুডস থেকে বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি, পুরনো আমলের ঝাড়লন্ঠন থেকে শুরু করে টাইপরাইটারেরও দেখা পাবেন এই মেলায়। অদ্ভূত শুনতে লাগলেও এটা সত্যি। মথুরাপুর রোড স্টেশন থেকে মাত্র ১০ মিনিট হেঁটে পৌঁছে যেতে পারবেন এই মেলায়। মেলায় ঝাঁ চকচকে শহুরে ছাপ না থাকলেও, দেখা মেলে বিভিন্ন রাইড, খাবারের স্টল ও অঢেল পসরার।
advertisement
লোকমুখে জানা যায়, নবদ্বীপ থেকে শ্রীচৈতন্য ওড়িশা রওনা দেওয়ার কালে, মকর সংক্রান্তির দিন এই স্থানে রাত্রিবাস করেছিলেন। তখন এই স্থান থেকে বইত আদি গঙ্গা। আজ সেসব এখানে না থাকলেও, রয়ে গিয়েছে ইতিহাস। তাই পৌষ সংক্রান্তির পূণ্যদিনে এখানকার মহাশ্মশান সংলগ্ন পবিত্র পুকুরে চলে পুণ্যার্থীদের স্নান পর্ব। সেই উপলক্ষ্যেই এই মেলার আয়োজন করা হয়। কিন্তু কালচক্রে গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র মানুষদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে ভাঙাচোরা পুরনো জিনিসপত্রের মেলায় পরিণত হয়েছে এই সংক্রান্তির মেলা। ফেলে দেওয়া তক্তোপোশ, বাতিল কার্পেট, শয্যার খাট থেকে বাচ্চাদের কাঠের দোলনাও মজুত থাকে এই মেলাতে। পাশাপাশি দেখা মেলে, অতীতের সাদাকালো ছোট মোবাইল, গ্রামাফোন, পুরনো আমলের লন্ঠন, রেডিও সহ আরো নানা জিনিসের। সংগ্রহগুলো খুঁটিয়ে দেখলে কিন্তু প্রশংসা করতেই হবে। বোঝাই যায়, বিক্রেতারা বাড়ি বাড়ি ঘুরে এসব সংগ্রহ করেছেন। তবে এই বছর করোনার থাবা পড়েছে ভাঙাচোরা মেলাতেও। তাই প্রশাসনের তরফ থেকে বন্ধ রাখা হয়েছে এই মেলা। ফলে মন খারাপ মথুরাপুর বাসীদের।
