জনপরিসরের সুবিধা অনেক সময়ই ভুলভাবে ব্যবহার করলে নিরাপত্তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। সম্প্রতি ভারতীয় রেলের একটি কোচ থেকে ওঠা একটি ঘটনার পরে সেই আলোচনা ফের তীব্র হয়েছে। যাত্রাপথে এক মহিলা বৈদ্যুতিক কেটলিতে ম্যাগি রান্না করায় বহু যাত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ট্রেনের চার্জিং পয়েন্টে এমন উচ্চ ক্ষমতার যন্ত্র চালানো যে গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করতে পারে, সেটাই এই ঘটনায় সামনে এসেছে।
advertisement
এক সহযাত্রী এই দৃশ্য রেকর্ড করে অনলাইনে শেয়ার করেন। ভিডিওতে দেখা যায়, মহিলা বার্থে বসে রয়েছেন, পাশে ছোট টেবিলের ওপর বৈদ্যুতিক কেটলি। কেটলির মুখ দিয়ে বাষ্প বেরোচ্ছে, ক্যামেরা কাছে যেতেই দেখা যায় তার ভিতরে ফুটছে ম্যাগি নুডলস। পাশে পড়ে রয়েছে ম্যাগির প্যাকেট। এমনকী তিনি ভিডিওগ্রাহককে উৎসাহ দিয়েই বলছেন—এটা ভাইরাল করা যেতে পারে, যাতে অন্যরাও এই “হ্যাক” শিখে নিতে পারে।
ভুলেও ছোঁবেন না ‘মটরশুঁটি’, যদি থাকে ৬ রোগ…! আপনার ‘চিরশত্রু’ এই সবুজ সবজি, কেন জানেন?
এক্স (পূর্বতন টুইটার)-এ পোস্ট করে ক্যাপশন দেওয়া হয়—“এটা ভয়ঙ্কর নিরাপত্তা ঝুঁকি। সামান্য আগুন লাগলে পুরো কোচের যাত্রীদের প্রাণ বিপন্ন হতে পারে। এই কারণেই আমাদের ভাল জিনিস দেওয়া যায় না। সুবিধা দেওয়া হলে তার অপব্যবহার করাই নিয়ম। সামাজিক বোধের ঘাটতি বহু মানুষের।”
‘লজ্জার বিন্দুমাত্র বোধ নেই’: ট্রেনে ম্যাগি রান্নায় ক্ষোভ ইন্টারনেটে
ভিডিও ছড়াতেই ক্ষোভ বাড়তে থাকে। বহু মানুষ মন্তব্যে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানান। তাঁদের বক্তব্য—ট্রেনের ভিতরে বৈদ্যুতিক কেটলি চালানো বিপজ্জনক এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন।
একজন লিখেছেন, “সমস্যা হল—অনেকেই ভাবে, টাকা দিয়ে টিকিট কেটেছি বলে যা খুশি করা যায়। টাকায় শিষ্টাচার কেনা যায় না। এমন চরিত্র ৩-এসি কোচে ভিড় করে।”
আরও একজনের মন্তব্য, “২২০ ভোল্টের যন্ত্র ১১০ ভোল্টের পয়েন্টে লাগানো হয়েছে। যে কোনও সময় দুর্ঘটনা হতে পারে।”
একজন বললেন, “প্রযুক্তিগতভাবে এই ধরনের যন্ত্র লাগালে মেইন এমসিবি ট্রিপ করার কথা। এমন সুইচ উচ্চ-ক্ষমতার যন্ত্রের জন্য তৈরি নয়।”
মায়াপুর যাওয়া এবার একদম সহজ! শিয়ালদহ থেকে ৩ জোড়া EMU ট্রেন পরিষেবা চালু ঘোষণা! জানুন বিশদে
এক দর্শক বিরক্ত হয়ে লিখেছেন, “একটা সুবিধা দেওয়া হলে আমরা ৯৮৭টা উপায় বার করব সেটা নষ্ট করার জন্য। অন্যের নিরাপত্তা, অসুবিধা—সবই আমাদের কাছে কুসংস্কারের মতো।”
আরও একটি মন্তব্যে ভর্ৎসনা—“সমস্যা হল আমরা কেবল নিজেদের কথা ভাবতে শিখেছি। সমাজ বা অন্যদের নিয়ে ভাবনা নেই। জুগাড়ু সংস্কৃতিকে অতিরিক্ত বড়াই করা হয় বলে এই মহিলা নিশ্চয়ই গর্ববোধ করছেন, লজ্জার লেশমাত্র নেই।”
এক তীব্র মন্তব্যে লেখা, “খাওয়া-দাওয়া থামা চলবে না। সেফটি অপেক্ষা করতে পারে।”
শাস্তির দাবিও উঠেছে। এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, “আশা করি এই মহিলাকে দ্রুত গ্রেফতার করা হবে। কড়া ব্যবস্থা না নিলে এমন বোকামিকে অনেকেই ‘স্মার্টনেস’ বলে দেখাবে এবং নকল করবে।”
