অনেকে তা বলতে পারেন। শাড়ি বা ঘাঘরা পরে বাইকে দুই দিকে দুই পা ঝুলিয়ে বসা অসুবিধার তো বটেই! তবে এর নেপথ্যে শতাব্দী প্রাচীন রক্ষণশীল মানসিকতাও রয়েছে, যা অনেকেই হয়তো জানেন না।
পাকিস্তানি ইনস্টাগ্রাম ইনফ্লুয়েন্সার এবং কন্টেন্ট ক্রিয়েটর জেনিথ ইরফান এই প্রসঙ্গে সম্প্রতি আলোকপাত করেছেন। তাঁর ১,০০,০০০-এরও বেশি ফলোয়ার রয়েছে, তিনি প্রতিবেশী দেশের দেশের প্রথম মহিলা যিনি প্রয়াত বাবার স্বপ্ন পূরণের জন্য সাইকেলে করে গোটা পাকিস্তান ভ্রমণ করেছেন। সম্প্রতি তিনি একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন যেখানে দক্ষিণ এশিয়ার, বিশেষ করে ভারত এবং পাকিস্তানের মহিলারা কেন সাইকেলের পিছনে বা বাইকে একপাশ থেকে বসেন তার কারণ ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
advertisement
যদিও জেনিথ বিশেষভাবে পাকিস্তানের কথা বলেছেন, এই রীতি ভারতেও দেখা যায়। তিনি ব্যাখ্যা করেন যে এই বসার ধরনটি দক্ষিণ এশীয় সংস্কৃতির স্থানীয় নয়, বরং তা ব্রিটিশ প্রভাব থেকে উদ্ভূত।
তাঁর মতে, এই প্রথাটি চতুর্দশ বা পঞ্চদশ শতাব্দীতে বোহেমিয়ার রাজকুমারী অ্যানের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল, যিনি একদিকে পা রেখে ঘোড়ায় চড়ে ইউরোপ পাড়ি দিয়েছিলেন- প্রায় ১,০০০ মাইলের (১,৬০০ কিলোমিটার) ছিল সেই যাত্রা। সেই সময়ে পুরুষদের মতো দুই দিকে পা রেখে ঘোড়ায় চড়া নারীদের ক্ষেত্রে অশালীন বলে বিবেচিত হত।
দক্ষিণ এশীয় ঐতিহ্য বনাম ব্রিটিশ প্রভাব
জেনিথ উল্লেখ করেন যে এটি কখনই দক্ষিণ এশীয় ঐতিহ্যের অংশ ছিল না। একজন পাকিস্তানি হিসেবে তিনি ভারতের নির্ভীক যোদ্ধা রানী লক্ষ্মীবাঈয়ের কথা উল্লেখ করেন, যিনি উভয় দিকে পা রেখে ঘোড়ায় চড়ে অনেক যুদ্ধ করেছিলেন।
ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক যুগ তাঁদের রীতিনীতি চালু করে এবং মোটরসাইকেল আসার পর সেই সবের প্রভাবেই মহিলারা একপাশে পা রেখে বসতে শুরু করেন।
তাঁর ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে, ৭,০০,০০০-এরও বেশি ভিউ পেয়েছে এবং ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। একজন ইউজার জেনিথের শেয়ার করা তথ্যের প্রশংসা করেছেন, অন্য দিকে, InDrive.pk এটিকে মূল্যবান তথ্য বলে অভিহিত করেছে।
অনেকে দুঃখ প্রকাশ করেছেন যে ব্রিটিশরা চলে গেলেও তাদের সাংস্কৃতিক প্রভাব রয়ে গিয়েছে, একজন ইউজার সোচ্চার হয়েছেন- ‘‘অবশেষে কেউ এই বিষয়ে কিছু বলেছেন।’’