ভারত নামের এক তরুণ, যিনি বহুদিন ধরে নিজের জন্য একজন জীবনসঙ্গিনী খুঁজছিলেন। তাঁর বাবা তখনই পরিচয় করিয়ে দেন নন্দকিশোর সোনি নামের এক পরিচিতের সঙ্গে, যিনি প্রতিশ্রুতি দেন বিহারের এক ‘উপযুক্ত’ মেয়ের সঙ্গে বিয়ে ঠিক করে দেওয়ার।
আরও পড়ুন: বলুন তো, ভারতের দীর্ঘতম জাতীয় সড়ক কোনটি! ৯৯% মানুষই জানেন না সঠিক উত্তরটি…
advertisement
২৩ বছর বয়সী সুমন পান্ডে, পরিচয় করানো হয় পাত্রী হিসাবে। ৩ লক্ষ টাকার বিনিময়ে বিয়ে সম্পন্ন হয় – যার মধ্যে ১.৭ লক্ষ টাকা নগদ এবং ১.৩ লক্ষ টাকা অনলাইনে দেওয়া হয় মধ্যস্থতাকারীদের।
বিয়ে হয় আর্য সমাজ মন্দিরে, রীতিমতো ঐতিহ্য মেনে। ভারত মনে করলেন, অবশেষে তাঁর জীবনে এসেছে সুখের দিন। কিন্তু সেই সুখ টিকল মাত্র দুইদিন।
বিয়ের দ্বিতীয় রাত, হানিমুনের আবহে বর যখন স্ত্রীর সঙ্গে সময় কাটাতে যান, তখনই সামনে আসে এক গোপন সত্য। ভারত জানতে পারেন, সুমন আসলে আগে থেকেই বিবাহিত। মন্দিরে বিয়ের সময় তিনি জাল কাগজপত্র দেখিয়ে নিজেকে অবিবাহিতা দাবি করেছিলেন। এই খবরে দুইজনের মধ্যে শুরু হয় তুমুল বিবাদ। সেই মুহূর্তেই সুমন একটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন।
আরও পড়ুন: ‘GAY’ কোড নিয়ে চরম বিতর্ক! জেনে নিন বিশ্বের সবচেয়ে মজার বিমানবন্দর কোডের তালিকা…
পরিস্থিতি বেগতিক দেখে সুমন তার স্বামী ভারতকে ঘরের ভিতরে তালাবদ্ধ করে দেন। এরপর সিনেমার স্টাইলে নিজের শাড়ি ছিঁড়ে বানান একটি দড়ি এবং বারান্দা থেকে নিচে নামার চেষ্টা করেন। নিচে তাঁর দুই সঙ্গী, সন্দীপ ও রবি, তাঁকে ধরার অপেক্ষায় ছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল, সুমনকে নিয়ে দ্রুত পালানো৷
কিন্তু নাটকীয় মোড় আসে ঠিক তখনই—দড়ি ছিঁড়ে যায় বা তাঁর হাত ফসকে যায়। সুমন নিচে পড়ে যান, এবং তাঁর দুই পা ভেঙে যায়। সেই মুহূর্তে তাঁর চিৎকারে জেগে ওঠে বাড়ির অন্য সদস্যরা। তাঁকে ধরে ফেলেন, তবে নিচে অপেক্ষমাণ দুই সঙ্গী পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।
আহত সুমনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শুরুতে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টাও করেন তিনি। কিন্তু এক পর্যায়ে ভেঙে পড়ে সব ফাঁস করে দেন।
পুলিশ জানতে পারে, এটি একটি বৃহৎ প্রতারণার চক্র, যারা বহু রাজ্যে সক্রিয়। এই গ্যাং বিয়ের নামে পুরুষদের কাছ থেকে টাকা নিত এবং তারপর নববধূ কিছুদিনের মধ্যে পালিয়ে যেত। গ্যাংয়ে ছিলেন উত্তরপ্রদেশের সন্দীপ শর্মা, বিহারের রবি ও রুবি দেবী এবং যোধপুরের নন্দকিশোর ও জিতেন্দ্র সোনি।
পুলিশ ইতিমধ্যেই একটি এফআইআর দায়ের করেছে এবং পলাতকদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। প্রশাসনের সন্দেহ, এই গ্যাং এর আগেও বহু মানুষকে একইভাবে প্রতারণা করেছে।