তবে জীবনের এই চূড়ান্ত সাফল্য ছিনিয়ে নিতে শান্তনুকে মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্টের (Madhya Pradesh High Court) দরজায় তিন বছর ধরে যেতে হয়েছে- এক কিংবা দু'বার নয়, কমপক্ষে ৮০ বার। শেষ পর্যন্ত উচ্চ আদালতের রায়ে পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের থেকে ২৮ নম্বর বেশি পেয়ে দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন ওই যুবক। ঘটনায় ইতিমধ্যেই তোলপাড় গোটা মধ্যপ্রদেশ। কিন্তু কী এমন ঘটনা ঘটল যার জন্য শান্তনুকে পড়াশোনা ছেড়ে হাই কোর্টের দরজায় ৮০ বার কড়া নাড়তে হল?
advertisement
জানা গিয়েছে, মধ্যপ্রদেশের সাগরের পারাকোটার বাসিন্দা শান্তনু (Shantanu Shukla) ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছাত্র। পড়াশোনার পাশাপাশি অসীম ধৈর্য তাঁর। কিন্তু কেমন সেই ধৈর্যের নমুনা? জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালে দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন শান্তনু। এ পর্যন্ত সবই ঠিক ছিল। কিন্তু ছন্দ কাটল ঠিক সেই সময় যখন ওই যুবক তাঁর দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষার মার্কশিট অর্থাৎ রেজাল্ট হাতে পেলেন। ওই পরীক্ষায় ৭৪.৮০ শতাংশ নম্বর নিয়ে পাশ করেন তিনি। কিন্তু মজার ঘটনা এটাই মধ্যপ্রদেশ সরকার ৭৫ শতাংশের নীচে নম্বর পাওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের স্কলারশিপ বৃত্তি প্রদান করে না। কিন্তু নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস ছিল শান্তনুর। এই আত্মবিশ্বাসে ভর দিয়ে মধ্যপ্রদেশ বোর্ড অফ (Madhya Pradesh Board of Secondary Education) সেকেন্ডারি এডুকেশনের দফতরে ওই যুবক তাঁর পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের থেকে এক নম্বর বাড়িয়ে দেওয়ার আর্জি জানান।
আরও পড়ুন-দক্ষিণ চিন সাগরে চিনের নৌ-বাহিনীর মহড়া জোরকদমে ! এর পর তাহলে কী ?
তবে শান্তনুর ওই আর্জিতে কর্ণপাত করেননি মধ্যপ্রদেশ বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশনের কর্তারা। শেষ পর্যন্ত মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্টে মামলা করেন ওই যুবক। এরপর কেটে যায় তিন তিনটে বছর। নয় নয় করে এই তিন বছরে ১৫ হাজার টাকা খরচ করে ৮০ বার উচ্চ আদালতে হাজিরা দিয়ে শেষ পর্যন্ত আদালতের নির্দেশে মাত্র এক নম্বর নয়, ২৮ নম্বর বেশি পান শান্তনু। তাঁর পরীক্ষার খাতা পুনরায় চেক করে ওই নম্বর শান্তনুকে দিতে বাধ্য হন বোর্ড কর্তারা। বর্তমানে দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষায় তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৮০ শতাংশের ওপর। অবশেষে মধ্যপ্রদেশ সরকারের মেধাবৃত্তির তালিকায় নিজের নামটি খোদাই করে নেন মধ্যপ্রদেশের দরিদ্র মেধাবী ছাত্র শান্তনু। ঘটনার খবর চাউর হতেই সমাজের একাধিক ব্যক্তি বলেছেন, একেই বলে লড়াই, যা আমাদের শান্তনু শেখালেন!