মুজফ্ফরপুর, বিহার: সরকারের তরফে সদিচ্ছার অভাব নেই। তাই আইন করে নিষেধ করা হয়েছে রাজ্যে মদ খাওয়া। মদ খাওয়ার প্রবণতা শুধু তো আর ব্যক্তির শরীরেই প্রভাব ফেলে না, তা মাত্রাছাড়া পর্যায়ে পৌঁছে গেলে একই সঙ্গে প্রভাবিত হয় সমাজ এবং পরিবারও। এই কারণেই বিহার দেশের মদবর্জিত রাজ্য। কার্যত দেখা যাচ্ছে যে তা কেবলই খাতায়-কলমে। মদের চোরাচালান এবং মদ খাওয়া- দুই এই রাজ্যে রমরমিয়ে চলছে।
advertisement
আনন্দ অনুষ্ঠানে মদ খাওয়া মোটামুটি প্রায় সারা দেশেরই রেওয়াজ। বিশেষ করে বিয়েবাড়িতে মদ পরিবেশন করার রেওয়াজ রয়েছে পঞ্জাবে। অনেকেই আজকাল বিয়ের প্রীতিভোজে ককটেল পার্টিও দিয়ে থাকেন। বহু বছর ধরে বিহারও এই রীতিতে অভ্যস্ত ছিল। কিন্তু আইন করে মদ সেই রাজ্যে নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে খুলে গিয়েছে এক নতুন ব্যবসার পথ- মদের চোরাচালান।
নানা সময়েই খবর আসে যে কীভাবে বিহারের আবগারি দফতর নানা জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে পেটির পর পেটি মদের বোতল বাজেয়াপ্ত করেছে। খবর আসে মদের চোরাচালানকারীদের হাতেনাতে ধরা পড়ার খবরও। অপরাধ কিন্তু তাতে থেমে থাকে না। পুলিশের চোখে ধুলো দেওয়ার জন্য মাথা খাটিয়ে বের করা হয় নিত্য নতুন সব পদ্ধতি। যার এক চেহারা সম্প্রতি প্রকাশ্যে এল চলতি শীতের বিয়ের মরশুমে।
জানা গিয়েছে, বিহারের আবগারি দফতর এবং পুলিশের কাছে খবর ছিল যে চলতি শীতের বিয়ের মরশুমে রাজ্যে বিপুল পরিমাণে মদের চোরাচালান হয়েছে। ফলে, দুষ্কৃতীদের ধরতে বদ্ধপরিকর ছিল পুলিশ। পথের মোড়ে মোড়ে বিশেষ দল তল্লাশি চালাচ্ছিল। আর তাতেই বরযাত্রীদের শোভাযাত্রা থেকে আইনভঙ্গকারীদের সনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
আসলে, আত্মীয় বা বন্ধুর বিয়ে উপলক্ষ্যে অনেকেই সেজেগুজে বারাত বা বরযাত্রীদের শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছিলেন। এমনই এক একটি বারাত থামিয়ে সবাইকে পরীক্ষা করা শুরু করে পুলিশ। তখনই দেখা যায় যে সেই সব বরযাত্রীদের শোভাযাত্রায় যাঁরা সামিল হয়েছেন, তাঁরা অনেকেই মদ খেয়ে রয়েছেন। মদের নেশায় মত্ত এমন বেশ কিছু ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়।
এখানেই শেষ নয়! জানা গিয়েছে যে রাজ্যের বিভিন্ন থানা এলাকায় বরযাত্রীদের শোভাযাত্রা থেকে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ৭ মদ মাফিয়াও রয়েছে। বরযাত্রী সেজে এরা অনুষ্ঠানে মদ নিয়ে আসে যাতে কেউ সন্দেহ করতে না পারে। এই ৭ মদ মাফিয়া ছাড়া ৪৮ জন নেশাগ্রস্ত ব্যক্তিকেও হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। ওই মদ মাফিয়াদের সঙ্গে আরও কারা জড়িত, সেই বিষয়ে তদন্ত চলছে।