শোনা যাচ্ছে মহাসাগরের তলদেশে বিশাল এলাকা জুড়ে তৈরি হওয়া গর্তটি আসলে গ্র্যাভিটি হোল অর্থাৎ মাধ্যাকর্ষণজাত গর্ত। যেখানে পৃথিবীর অভিকর্ষ বল অস্বাভাবিক রকম দুর্বল। আর সবথেকে বড় কথা হল, এর জেরে বসে যাচ্ছে সমুদ্রতল। ফলে এটা বিশ্বের অন্যতম রহস্যজনক স্থানের তালিকায় জায়গা করে নিচ্ছে।
আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গে বিভীষিকা! জলের তোড়ে ফালি ফালি ভুটানগামী রাস্তা! ভেসে গিয়ে নিখোঁজ এক
advertisement
বর্তমানে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সের দুই বিজ্ঞানী দেবাঞ্জন পাল এবং আত্রেয়ী ঘোষ এই সংক্রান্ত একটি তত্ত্ব উপস্থাপন করেছেন। যা এই রহস্যময় বিষয়টির উপর আলোকপাত করছে। তাঁদের দাবি, পৃথিবীর ভূত্বকের নিচে প্রায় ১০০০ কিলোমিটার (প্রায় ৬২১ মাইল) জুড়ে একটি অত্যন্ত শীতল এবং গভীর এলাকা রয়েছে। এটা আসলে প্রাচীন মহাসাগরের অবশিষ্টাংশ। যা প্রায় ৩ কোটি বছর আগে আফ্রিকার নীচে আটকে রয়েছে। এই গোটা প্রক্রিয়ার জেরে রাশি রাশি গলিত শিলা উত্থিত হয়। যার ফলে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে অগ্ন্যুৎপাতের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: উত্তরে লাল সতর্কতা! এদিকে পুরুলিয়ায় ৩৪ ডিগ্রি, কবে বদলাবে আবহাওয়া? হাওয়া অফিসের বড় খবর!
এই জটিল ধাঁধার সমাধানে বিজ্ঞানী দেবাঞ্জন পাল এবং আত্রেয়ী ঘোষ অনেক গবেষণা চালিয়েছেন। বিগত ১৪০ মিলিয়ন বছর ধরে কীভাবে পৃথিবীর টেকটনিক প্লেট চলাচল করে চলেছে, এই বিষয় নিয়েই মূলত ছিল তাঁদের পড়াশোনা। তাঁরা কিছু সিম্যুলেশন চালান এবং সেগুলোকে জলের নিচের গর্তের সঙ্গে তুলনা করেন। যাকে আমরা গ্র্যাভিটি হোল বলি। সেই সব সিম্যুলেশনের সঙ্গে ভারত মহাসাগরের গ্র্যাভিটি হোলের মিল পাওয়া গিয়েছে। উভয় ক্ষেত্রেই একটা বিষয় সাধারণ ছিল। আর সেটা হল প্রচুর পরিমাণ গরম ম্যাগমা এবং ম্যান্টল স্তরের নিচে থাকা একটি বিশেষ গঠন।
গবেষকদের মতে, গন্ডোয়ানা থেকে ভারতীয় প্লেট ভেঙে যাওয়ার পর তার সংঘর্ষ হয় ইউরেশিয়ান প্লেটের সঙ্গে। যার ফলে এটি টেথিস প্লেটের উপর দিয়ে চলে যায়। যেহেতু বর্তমান কালের পূর্ব আফ্রিকার কাছে এর ম্যান্টল রয়েছে, ফলে প্রাচীন টেথিস মহাসাগরের টুকরো টুকরো অংশগুলি ধীরে ধীরে ম্যান্টলের নিচের দিকে ডুবে যেতে থাকে। শেষে ২০ মিলিয়ন বছর আগে প্লিউম তৈরি করার জন্য ম্যাগমাকে স্থানচ্যুত করে ডুবন্ত টেথিয়ান প্লেট।
