হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে স্থাপিত DKIST বা ‘ড্যানিয়েল কে ইনোয়ে সোলার টেলিস্কোপ’ এমন কিছু ছবি তুলেছে যা চমকে দিতে পারে। এই সব ছবিতে প্রথমবার সূর্যের ‘ক্রোমোস্ফিয়ার’-এর স্পষ্ট ছবি উঠেছে। ক্রোমোস্ফিয়ার হল সূর্যপৃষ্ঠের ঠিক উপরের বায়ুমণ্ডল। গত ৩ জুন ২০২২ সালে এই ছবিগুলি তুলেছে সৌর টেলিস্কোপটি। ছবিগুলিতে ১৮ কিলোমিটার রেজোলিউশনে প্রায় ৮২,৫০০ কিলোমিটার এলাকা ধরা পড়েছে।
advertisement
ক্রোমোস্ফিয়ার কী?
সূর্যের বায়ুমণ্ডলের সব থেকে বাইরের অংশকে করোনা বলে। আর একেবারে সূর্যপৃষ্ঠের অংশকেই বলা হয় ক্রোমোস্ফিয়ার। এটি বেশির ভাগ সময়ই সূর্যের ‘ফোটোস্ফিয়ার’ বা সূর্যের আলোকময় বহিরাবরণের মেঘ দ্বারা আচ্ছন্ন থাকে। যে ছবিগুলি টেলিস্কোপ তুলেছে সেগুলি সবই পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের সময়। সে সময় ফোটোস্ফিয়ার থেকে বিচ্ছুরিত আলো অনেকটাই বাধা প্রাপ্ত হয়েছিল চাঁদের ছায়ায়। ফলে ওই অংশটি একটি উজ্জ্বল লাল বলয় হিসেবে সূর্যের মূল অংশের বাইরে দেখা গিয়েছিল।
আরও পড়ুন- মনিরামবাটি জমিদারবাড়ি পুজোর ধুনো পোড়ানো দেখতে আজও অগণিত উৎসাহী ভিড় করেন
এই গবেষণার অন্যতম লক্ষ্য হল মহাকাশের আবহাওয়া, অতি উজ্জ্বল সৌরশিখা এবং করোনা থেকে ছিটকে আসা মহাজাগতিক পদার্থ যা মহাকাশে ছড়িয়ে পড়ছে। NSF-র অধিকর্তা সেতুরামণ পঞ্চনাথন বলেন, ‘NSF-এর ইনোয়ে সোলার টেলিস্কোপ হল বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী সৌর দূরবীক্ষণ যা আমাদের সূর্য সংক্রান্ত যাবতীয় প্রাচীন ধ্যান ধারণাকে ভেঙে দেবে। সৌর ঝড়ের ক্ষেত্রে আমাদের গ্রহের ভবিষ্যত বাণী করার প্রক্রিয়াও বদলে যাবে।’
ড্যানিয়েল কে. ইনোয়ে সোলার টেলিস্কোপ বা DKIST-কে বসানো হয়েছে মাউই-এর হাওয়াই দ্বীপের হালিকালা মানমন্দিরের কাছে। এই জায়গাটির বিশেষত্ব হল এই যে, এখানে দিনের দৈর্ঘ্য বেশি, যা একটি সৌর দূরবীক্ষণের খুবই প্রয়োজন। তা ছাড়া, সমুদ্র ঘেরা প্রকৃতিক মধ্যে প্রায় ১০ হাজার ফুট (৩ হাজার মিটার) উচ্চতায় পরিষ্কার আকাশও পাওয়া যায়, যায় সূর্যের করোনা ও ক্রোমোস্ফিয়ার দেখার পক্ষে আদর্শ হতে পারে। এই পরিবেশে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে কোনও ধুলো থাকার কথা নয়।
DKIST-তে এমন আয়না ব্যবহার করা হয়েছে যা এখনও পর্যন্ত পৃথিবীর কোনও সৌরযন্ত্রে ব্যবহার করা হয়নি। ১৩ ফুট (৪ মিটার) চওড়া এই আয়না প্রচুর পরিমাণ সূর্যালোক গ্রহণ করতে পারে। তার ফলেই অতি স্বচ্ছ উচ্চ রেজোলিউশনের ছবি আমরা দেখতে পাচ্ছি।