সিরমৌর, হিমাচল প্রদেশ: পরনে শতচ্ছিন্ন পোশাক। উদ্দেশ্যহীনভাবে রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন এক ব্যক্তি। দেখলে মনে হবে ভিখারি বোধহয়। তাঁকে থানায় নিয়ে আসে হিমাচল প্রদেশের সিরমৌরের পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে ওই ব্যক্তি জানান, তাঁর নাম মদন শাহ। অসমের বাসিন্দা। এরপরই আসল ঘটনা সামনে আসে। হতবাক হয়ে যান পুলিশ কর্তারা।
আইপিএস রমন কুমার মীনা জানিয়েছেন, মদন শাহ নামের ওই ব্যক্তি মানসিক ভারসাম্যহীন। তাঁকে তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বাড়ি ফেরার জন্য আর্থিক সাহায্যও করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, ২৫ জানুয়ারি নাহান পুলিশ থানায় খবর আসে পাশের একটি এলাকায় মানসিকভাবে অসুস্থ এক ব্যক্তি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। খবর পাওয়ার পরেই ওই ব্যক্তিকে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।
advertisement
কিন্তু ওই ব্যক্তি মানসিকভাবে পুরোপুরি বিপর্যস্ত ছিলেন। তাঁর ভাষাও বোঝা যাচ্ছিল না। ফলে পুলিশের কাজ কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। শুরু হয় কাউন্সেলিং। ধীরে ধীরে জানা যায়, ওই ব্যক্তি অসমের বাসিন্দা। হিমাচলের পুলিশ তখন অসম পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁর বাড়ির ঠিকানা খুঁজে বের করে। আইপিএস রমন কুমার মীনা জানিয়েছেন, অসমের রত্নপুর থানার সঙ্গে নাহান পুলিশ যোগাযোগ করে। সেখানে মদন শাহের নামে নিখোঁজ ডায়েরি করেছিলেন তাঁর পরিবারের লোকজন। এরপর ভিডিও কলে তাঁরা মদনকে শনাক্ত করেন।
তিনি আরও জানান, পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভাল না হওয়ায় তাঁদের পক্ষে হিমাচলে আসা সম্ভব ছিল না। উত্তর প্রদেশে ওই ব্যক্তির বোনের বিয়ে হয়েছে। তিনিই নাহান পুলিশ থানায় এসে ভাইকে নিয়ে যান। সেখান থেকে যান অসমে।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, যেহেতু তাঁর পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ তাই মদন শাহকে ভাল পোশাক এবং বাড়ি ফেরার মতো টাকা দেওয়া হয়। থানায় ভাইকে দেখে কেঁদে ফেলেন বোন রাধা। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, নাহান পুলিশ তাঁদের কাছে দেবতার মতো। ভাইকে তাঁর বোনের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে। রাধা জানান, তিনি ভাইকে খুঁজে বের করার অনেক চেষ্টা করেছিলেন। মন্দিরে মন্দিরে পুজোও দিতেন। অবশেষে ঈশ্বর মুখ তুলে চেয়েছেন।
প্রসঙ্গত, এক বছর আগে নিখোঁজ হয়ে যান মদন শাহ। কিন্তু অসম থেকে তিনি কীভাবে হিমাচল প্রদেশে পৌঁছলেন তা জানা যায়নি। তবে তাঁর খোঁজে বিভিন্ন রাজ্যে অনুসন্ধান চালাচ্ছিল পুলিশ। শেষমেশ সিরমৌর পুলিশ তাঁর সন্ধান পায়। ভাইকে খুঁজে দেওয়ার জন্য পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বোন রাধা।