সম্প্রতি ৬০ বছর বয়সে মাউন্ট এভারেস্টে উঠে রেকর্ড করে ফেলেছেন মহারাষ্ট্রের বিডে জেলার বাসিন্দা শরদ কুলকর্নি। বছর চারেক আগে তাঁর স্ত্রী বিয়োগ হয়। তার পরই তিনি সিদ্ধান্ত নেন যেভাবেই হোক এভারেস্টের শিখরে তিনি উঠবেনই। আর তিনিই হলেন প্রথম ভারতীয় যিনি এই বয়সে জয় করলেন সর্বোচ্চ শৃঙ্গ।
আরও পড়ুন: পিঁপড়ের দুধ কতটা পুষ্টিকর? বিজ্ঞানীদের গবেষণায় উঠে এল তাজ্জবজনক তথ্য
advertisement
বিদের আদত বাসিন্দা হলেও শরদ কুলকার্নি সপরিবার থাকেন থানেতে। তিনি এবং তাঁর স্ত্রী অঞ্জলি কুলকর্নি, দু’জনেই পর্বতারোহণের বিষয়ে আগ্রহী ছিলেন। এবিষয়ে প্রশিক্ষণও নিচ্ছিলেন। দু’জনেই চেয়েছিলেন বিশ্বের সাতটি সর্বোচ্চ শৃঙ্গে আরোহণ করতে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী, তাঁরা হিমালয়ের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট থেকেই শুরু করেন অভিযান। সেটা ২০১৯ সাল।
কিন্তু মানুষ চায় এক, ঘটে অন্য। সেই পর্বতারোহণ অভিযানেই ঘটে যায় দুর্ঘটনা। অপূর্ণ থেকে যায় অঞ্জলির স্বপ্ন।
২০১৯ সালের ২২ মে এভারেস্টে আরোহণের সময় অভূতপূর্ব পরিস্থিতি তৈরি হয়। এত বেশি অভিযাত্রী সেবার এভারেস্টের দিকে উঠছিলেন যে লাইন পড়ে যায়। একের পর এক অভিযাত্রী অপেক্ষা করতে থাকেন উপরে ওঠার জন্য। সময় বেশি লাগায় ক্রমশ ফুরিয়ে আসে অক্সিজেন। এই পরিস্থিতিতে ওইখানেই মৃত্যু হয় অঞ্জলির।
তবে দমে যাননি শরদ। স্ত্রীর মৃত্যুর পর তিনি অধরা স্বপ্ন ফের বাস্তবায়িত করার সিদ্ধান্ত নেন। ৬০-এর কোঠায় বয়স, তবু অনুশীলন শুরু করেন। ইতিমধ্যে তিনি বিশ্বজুড়ে আরও চারটি চূড়া সফল ভাবে আরোহণ করেছেন। অবশেষে এভারেস্ট আরোহণের সিদ্ধান্ত। গত ২৩ মে ছিল তাঁর স্ত্রীর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী। সেই দিনই তিনি পা রেখেছেন এভারেস্টের চূড়ায়।
শরদই একমাত্র ভারতীয় যিনি ৬০ বছর বয়সে এভারেস্ট অভিযান সম্পূর্ণ করলেন। তবে তাঁর এভারেস্ট জয় এই প্রথম নয়। ২০১৯ সালের আগেও তিনি এভারেস্টে উঠেছিলেন। সেবার কোনও কারণে তেরঙ্গা উত্তোলন করতে পারেননি।
শরদ বলেন, ‘২৩ মে ২০২৩, সময়ও সকাল ১০.২৩, মাউন্ট এভারেস্টে পা রাখলাম। আমাদের দু’জনের স্বপ্নই সত্যি হল। এর থেকে আনন্দের আর কী হতে পারে।’ তিনি জানান, খুব কম মানুষই মাউন্ট এভারেস্টে ওঠার সুযোগ পান। তাঁকে এই সুযোগ করে দেওয়ার জন্য তিনি সকলের কাছে কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন। তবে এবছরও তাঁর বহু সহযাত্রী প্রাণ হারিয়েছেন। এই বিষয়টি নিয়ে শোক প্রকাশও করেছেন শরদ।