প্রতি মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্থী তিথি শাস্ত্রে গণেশের আরাধনার জন্য প্রশস্ত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বছরে যেহেতু ১২টি মাস, সেই জন্য প্রতি মাসেই একটি করে সঙ্কষ্টী চতুর্থী তিথি উদযাপিত হয়। এর মধ্যে শ্রাবণ মাসে যে ব্রত উদযাপিত হয়, তাকে বলা হয় সঙ্কষ্টী চতুর্থী বা অঙ্গারকী চতুর্থী। অঙ্গার বা কয়লার ধুনি জ্বালিয়ে, কঠোর ভাবে উপবাস পালন করে এই তিথি উদযাপন করা হয় গ্রহদেবতা মঙ্গলকে প্রসন্ন করার জন্যে। এই বছরে তিথিটি মঙ্গলবারেই পড়েছে, অতএব একে সুবর্ণযোগ বলা যায়।
advertisement
সাধারণ ভাবে শুক্লপক্ষের গণেশ চতুর্থীতে চাঁদ দেখা বারণ। কেন না, এক পুরাণ মতে চাঁদের জন্যই একদন্ত হয়েছিলেন গজানন। ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণের গণেশ খণ্ড বলে, একদা শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথিতেই গণেশ কুবেরের ভবন থেকে একটু বেশিই ভোজ খেয়ে মূষিক বাহনে চড়ে ফিরছিলেন কৈলাসে। পথে একটা সাপ তাঁর সামনে দিয়ে রাস্তা পেরিয়ে গেলে বাহনটি ভয় পেয়ে এক দৌড় দেয় গণেশকে পিঠ থেকে ফেলে দিয়ে! আকাশ থেকে এই ঘটনা দেখে চন্দ্র অট্টহাসিতে ফেটে পড়েন, তাঁর কলা হাসির চোটে বিক্ষিপ্ত হয়। তখন আর ক্রোধ সম্বরণ করতে না পেরে গণেশ নিজের একটা দাঁত ভেঙে নিয়ে ছুঁড়ে মারেন তাঁর দিকে। সঙ্গে এই অভিশাপও দেন- চন্দ্র কোনও দিনই আর পূর্ণ রূপে বিরাজ করতে পারবেন না। সেই থেকেই প্রতি পক্ষে চন্দ্রকলার হ্রাস এবং বৃদ্ধি হয়ে থাকে।
কিন্তু পরে চন্দ্রদেব তাঁর কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হলে তাঁকে ক্ষমা করে দেন গজানন। সেই উপলক্ষ্যে কৃষ্ণপক্ষের এই বিশেষ গণেশ চতুর্থীতে তাঁর পাশাপাশি চাঁদকেও অর্ঘ্য নিবেদন করতে হয়। পঞ্জিকা মতে আজ সারা দিন চতু্র্থী তিথি রয়েছে। তাই নিয়ম মতে সন্ধ্যাকালে গণেশের পূজা বিধেয়। হলুদ বা লাল রঙের বস্ত্র পরে, শুদ্ধ চিত্তে লাল ফুল, দূর্বা, সিঁদুর, মিষ্টান্ন অর্পণ করতে হবে গণেশকে। এর পর তাঁর সামনে জ্বেলে দিতে হবে ঘিয়ে প্রদীপ এবং ধূপ। ওম গং গণপতয়ে নমঃ- এই বীজমন্ত্র জপ করতে হবে। পরে চন্দ্রোদয় হলে দুধের মধ্যে মধু, চন্দন, সিঁদুর মিশিয়ে তা নিবেদন করতে হবে চন্দ্রদেবের উদ্দেশে; চন্দ্রোদয় হবে ২৭ জুলাই রাত ৯টা ৫০ মিনিটে।