সাহারানপুর: দুঃখ আর আনন্দ আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। কিন্তু এক-এক সময় দুঃখের পাল্লা এতটাই ভারি হয়ে যায় যে, স্বয়ং ঈশ্বরও সেই দুঃখ লাঘব করতে পারে না! আর এমনই এক ঘটনার সাক্ষী হল উত্তর প্রদেশের সাহারানপুর। বিয়ের সাত বছর পর একসঙ্গে চার সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন এক মহিলা। ফলে পরিবারের আনন্দও যেন চার গুণ বেড়ে গিয়েছিল। তবে সেই আনন্দ স্থায়ী হয়েছিল মাত্র কয়েক ঘণ্টা। কিন্তু কেন?
advertisement
স্থানীয় সূত্রে খবর, আসলে সাহারানপুরের বেহত রোডের শঙ্করপুরি কলোনির বাসিন্দা সুমিত সাইনি এবং মিনু সাইনি। বিয়ের সাত বছর পর তাঁদের কোল আলো করে আসে একসঙ্গে চার সন্তান। কিন্তু চার সন্তানের মধ্যে দুই সন্তান কেবল ক্ষণিকের অতিথি ছিল। আর বাকি দুই সন্তান এখনও মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। ফলে পরিবারের আনন্দও স্থায়ী হয়নি বেশিক্ষণ। তবে আপাতত বাকি দুই সন্তানকে নিয়েই আশার আলো দেখছে পরিবার।
বিয়ের সাত বছর পর সন্তানের আগমন:
২০১৭ সালের ১১ নভেম্বর ধুমধাম করে বিয়ে হয়েছিল সুমিত আর মিনুর। বিয়ের এক বছর পর অবশ্য মিনু এক কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। কিন্তু জন্মের এক বছর পরেই মারা গিয়েছিল সেই কন্যাসন্তান। ফলে গভীর শোকে ডুবে গিয়েছিল পরিবারটি। সেই সঙ্গে আনন্দ ফিরে আসার অপেক্ষায় ছিল পরিবারটি।
আল্ট্রাসাউন্ড রিপোর্ট:
চলতি বছরে ফের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছিলেন মিনু সাইনি। তাঁর আল্ট্রাসাউন্ড করা হয়েছে। জানা গিয়েছিল যে, মিনু তিন সন্তানের জন্ম দেবেন। কিন্তু ডেলিভারির সময় চার সন্তানের জন্ম দেন মিনু। দুই পুত্র আর দুই কন্যার জন্ম হওয়ায় আনন্দের বন্যা বয়ে যায় পরিবারে।
আনন্দ বদলে গেল দুঃখে:
তবে জন্মের ১০ ঘণ্টা পর এক কন্যা এবং ১২ ঘণ্টা পর এক পুত্রের মুত্যু হয়। এই দুই মৃত্যুতে পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া। এদিকে বাকি এক পুত্র এবং কন্যার অবস্থাও সঙ্কটজনক। আপাতত তাই তাঁদের জন্য প্রার্থনা করছে গোটা পরিবার।
অপারেশনের মাধ্যমে সন্তানের জন্ম:
গর্ভাবস্থার ৬ মাসে সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন মিনু। ফলে সময়ের আগে জন্মানোর কারণে চারটে বাচ্চাই দুর্বল ছিল। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন যে, তাদের অবস্থা ইতিমধ্যেই সঙ্কটজনক। আর দুজনকে বাঁচানোই যায়নি।
পরিবারের আশা এবং প্রার্থনা:
সুমিত সাইনি বলেন যে, “এই আনন্দ পাওয়ার জন্য আমরা বিগত সাত বছর অপেক্ষা করেছিলাম। আর ঈশ্বরও আমাদের একসঙ্গে চার সন্তানের আশীর্বাদ দিয়েছেন। কিন্তু তার মধ্যে আমরা দুজনকে হারিয়েছি। এখন আমাদের সমস্ত আশা বাকি দুই সন্তানকে ঘিরেই। ওরা যাতে ভাল হয়ে যায়, তার জন্য দিন-রাত প্রার্থনা করছি আমরা।”
চিকিৎসকের পরামর্শ এবং চিকিৎসা:
বাকি দুই সন্তান আপাতত সাহারানপুরের অংশী শ্রীবাস্তব নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকদের দল তাদের বাঁচানোর প্রাণপণ চেষ্টা করছে। কিন্তু সময়ের আগে জন্ম নেওয়ায় তাদের অবস্থা সঙ্কটজনক।