এক রাতে এয়ার কন্ডিশনার চালিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন সবাই। বন্ধ করার কথা আর খেয়াল ছিল না। সকালে ব্যাঙ্ক ম্যানেজার যুবক ঘুম থেকে উঠেই আঁতকে ওঠেন। দুই শিশুর কোনও সাড়া নেই। বিছানায় পড়ে রয়েছে তাঁদের নিথর দেহ। স্ত্রীর অবস্থাও খুব খারাপ। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি।
advertisement
এর জন্য এসি দায়ী নয়। পরিবারেরও কোনও দোষ ছিল না। কিন্তু আবাসনের সোসাইটির একটা ভুলের কারণেই তাঁদের চরম মূল্য দিতে হল। ইঁদুর ও কীটপতঙ্গ মারার জন্য রাসায়নিক স্প্রে করা হয়েছিল ফ্ল্যাটে। এসি চালাতেই তা পুরো ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। যার জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে। সন্তান হারানোর যন্ত্রণায় শোকে পাথর হয়ে গিয়েছেন ব্যাঙ্ক ম্যানেজার যুবক।
পুলিশের সন্দেহ ইঁদুর মারার কীটনাশক কোনওভাবে পরিবারের চার সদস্যের শরীরে প্রবেশ করে। রাসায়নিকের প্রভাব সহ্য করতে পারেনি দুই খুদে। প্রভাব পড়েছে বড়দের শরীরেও। স্ত্রীর অবস্থা গুরুতর। ব্যাঙ্ক ম্যানেজার যুবকও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, কুন্দ্রথুরের অ্যাপার্টমেন্টে কীটনাশক স্প্রে করা দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। ১৩ নভেম্বর এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। অ্যাপার্টমেন্টে ইদুরের উৎপাত বাড়ায় সোসাইটির তরফে একটি পেস্ট কন্ট্রোল সার্ভিস কোম্পানিকে রাসয়নিক পাউডার স্প্রের জন্য বরাত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেখান থেকে এত বড় ঘটনা ঘটে যেতে পারে তা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি।
বন্ধু তড়িঘড়ি হাসপাতালে ভর্তি করেন: ব্যাঙ্ক ম্যানেজার যুবকের নাম গিরিধরন। ফ্ল্যাটে যে পেস্ট কন্ট্রোল কীটনাশক স্প্রে করেছে তা তিনি জানতেন। কিন্তু তারপরেও রাতে সেখানেই থাকার সিদ্ধান্ত নেন। এমনকী এয়ার কন্ডিশনারও চালু করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, সকালে ঘুম ভাঙতেই প্রবল শ্বাসকষ্ট শুরু হয় গিরিধরনের। তিনি কোনওরকমে বন্ধুকে ফোন করে, গোটা ব্যাপারটা খুলে বলেন। সঙ্গে সঙ্গে ফ্ল্যাটে আসেন তাঁর বন্ধু। তিনি এবং গিরিধরনের প্রতিবেশীরা পরিবারের চার সদস্যকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান। পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার কুন্দ্রাথুরের একটি হাসপাতালে তাঁর ছেলে এবং মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় গিরিধরন ও তাঁর স্ত্রী পবিত্রার চিকিৎসা চলছে একটি বেসরকারি হাসপাতালে।