পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্ত ছাত্রের নাম কাশিফ মির্জা। জেরায় সে জানিয়েছে যে, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে বিনিয়োগের স্কিমের বিষয়ে গ্রাহকদের জানাত সে। কম সময়ে বেশি হারে রিটার্ন পাওয়ার প্রলোভন দেখিয়েই মূলত ফাঁদ পাতত ওই পড়ুয়া। এখানেই শেষ নয়, তাজ্জব হওয়ার মতো বিষয় এখনও বাকি। কারণ জেরার সময় পুলিশকে সে জানিয়েছে যে, বিলাসবহুল গাড়িতে চেপে স্কুলে যাতায়াত করতো সে। এ নিয়ে তার বাবার কাছে অভিযোগও জানিয়েছিল শিক্ষকরা।
advertisement
আরও পড়ুন– ‘এই’ জিনিসগুলো হাতের কাছে রাখুন, সাপ বাড়ির ত্রিসীমানায় ঘেঁষবে না, লেজ গুটিয়ে পালাবে
অভিযুক্ত ছাত্র আরও জানিয়েছে যে, এখনও পর্যন্ত মোট ৮০ লক্ষ টাকা প্রতারণা করেছে সে। আর বিলাসবহুল জীবনযাপনের জন্য ২০ লক্ষ টাকা খরচও করেছে। আর সবথেকে আশ্চর্যের বিষয় হল, তার কাছ থেকে একটি নোট গোনার যন্ত্রও উদ্ধার করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে তার একটি বিলাসবহুল গাড়ি এবং ল্যাপটপও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সোমবার তাকে দুদিনের রিমান্ডে নিয়েছে অজমের সাইবার থানার পুলিশ।
সাব-ইনস্পেক্টর মণীশ চরণ বলেন যে, গত ২১ মার্চ, ২০২৪ তারিখে ঊষা রাঠোর এবং মালা পাথরিয়া নাসিরাবাদ সিটি থানায় কাশিফের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। মোট ৫টি ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলেছিল ওই পড়ুয়া। তদন্তে জানা গিয়েছে যে, ২০২৩ সালে দুই বন্ধুর সঙ্গে মিলে লক্ষ্মী ইনভেস্টমেন্ট নামে একটি সংস্থাও খুলেছিল কাশিফ। সেখানে মাত্র ৪০০০ টাকায় শুরু হয়েছিল স্কিম। অভিযুক্ত আশ্বাস দিয়েছিল যে, মাত্র ২৮ দিনের মধ্যে দ্বিগুণ হয়ে যাবে বিনিয়োগকারীদের টাকা। এমনকী ভরসা জিততে প্রথম দিকে তারা দ্বিগুণ টাকাই দিচ্ছিল। এমনকী, অভিযুক্তের দূর সম্পর্কের আত্মীয়রাও এই প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
পুলিশের মতে, অভিযুক্ত সব সময় ব্র্যান্ডেড জামাকাপড় পরতো। এরপর অজমের-পুষ্করের বিলাসবহুল দামি দামি হোটেলে রাতও কাটাতো। আর সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই শিকার ধরতো সে। এদিকে কাশিফের বাবা পারভেজ মির্জা বলেন, তিনি শুধু এটাই জানেন যে, তাঁর ছেলে সোশ্যাল মিডিয়ায় শুধুই রিল বানায়। সন্তানকে ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি তুলেছেন তিনি। তবে অবশ্য পারভেজ মির্জা এ-ও স্বীকার করে নিয়েছেন যে, কিছু সময় আগে কাশিফের বিলাসবহুল গাড়ির বিষয়ে স্কুল থেকেই জানতে পেরেছিলেন তিনি। তা সত্ত্বেও কিছুতেই ছেলের দোষ দেখছেন না তিনি।
এদিকে জেরায় একটি বিনিয়োগের স্কিমের বিষয়ে মুখ খুলেছে অভিযুক্ত। সে জানিয়েছে যে, প্রথম দিকে চার সপ্তাহের জন্য ৩৯৯৯ টাকা বিনিয়োগ করা হত। এতে বিনিয়োগকারীরা পেতেন ২২০০ টাকা মুনাফা-সহ ৬১৯৯ টাকা। আবার ৬ সপ্তাহে ৯৯৯৯ টাকার স্কিম থেকে মিলত ১৫,৪৯৯ টাকা। এরপর ৮ সপ্তাহের জন্য ১৯,৯৯৯ টাকা বিনিয়োগ করে ২৯,৯৯৯ টাকা পাইয়ে দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল অভিযুক্ত। এখানেই শেষ নয়, ১৬ সপ্তাহের জন্য ১,৯৯,৯৯৯ টাকা বিনিয়োগ করলে ২,৭৯,৯৯৯ টাকা দেওয়া হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল অভিযুক্তরা।