সম্প্রতি, হায়দরাবাদের একটি নামী প্রাইভেট স্কুলের নার্সারি শ্রেণির ফি সংক্রান্ত একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, যা দেখে সবাই হতবাক। বিশ্বাস করা কঠিন, কিন্তু সত্যি— এখন ABCD শেখানোর জন্য দিতে হচ্ছে আড়াই লক্ষ টাকা!
আরও পড়ুন: বলুন তো, ভূমিকম্পে সমুদ্রে সুনামি হলেও নদীতে হয় না কেন? ৯৯% মানুষই জানেন না সঠিক উত্তরটি…
advertisement
এই ভাইরাল ছবিতে দেখা গেছে, স্কুলটি ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে নার্সারি শ্রেণির জন্য মোট ২.৫১ লক্ষ টাকা ফি নিচ্ছে। এতে রয়েছে টিউশন ফি ৪৭,৭৫০ টাকা, ভর্তি ফি ৫,০০০ টাকা, ইনিশিয়েশন ফি ১২,৫০০ টাকা এবং ফেরতযোগ্য ক্যাশ ডিপোজিট ১০,০০০ টাকা।
এছাড়া, বছর জুড়ে জুন, সেপ্টেম্বর, ডিসেম্বর ও একটি চতুর্থ কিস্তিতে বাকি টাকা পরিশোধ করতে হয়। সব মিলিয়ে পুরো ফি গিয়ে দাঁড়াচ্ছে ২,৫১,০০০ টাকা।
এই খবর সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর কাছে যেন এক বিশাল ধাক্কার মতো। যেখানে অনেকেই তাদের ন্যূনতম চাহিদাও মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন, সেখানে একটি ছোট বাচ্চাকে নার্সারিতে ভর্তি করানোর জন্য এত টাকা খরচ করা কি আদৌ সম্ভব? এমন প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে।
এই ফি সংক্রান্ত ছবি শেয়ার করেছেন সোশ্যাল মিডিয়া এক্স-এর ইউজার অনুরাধা তিওয়ারি। তিনি লিখেছেন, “এখন ABCD শেখাতে প্রতি মাসে ২১,০০০ টাকা খরচ করতে হবে? এই স্কুলগুলো কী এমন শেখাচ্ছে যে এত বিশাল ফি ন্যায্য মনে করা হচ্ছে?” তাঁর এই পোস্ট ঘিরে অনলাইনে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে।
অনেকেই এই ঘটনায় অবাক হয়েছেন এবং শিক্ষার বাণিজ্যিকরণ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ বলছেন, এখন স্কুলগুলো ধনীদের জন্যই শিক্ষা দিচ্ছে। আর সাধারণ মানুষের শিশুদের শিক্ষার অধিকার একপ্রকার কেড়ে নিচ্ছে এই ব্যবস্থা।
একজন ইউজার মন্তব্য করেছেন, “এটা স্কুল না পাঁচতারা হোটেল? এখন তো মধ্যবিত্তদের সন্তানদের পড়াশোনা করানোই কঠিন হয়ে পড়বে।” অন্য একজন লিখেছেন, “বেঙ্গালুরুতে তো এর থেকেও বেশি। সেখানে নার্সারির ফি ১০ লক্ষ টাকা থেকে শুরু হয়। ১১ ও ১২ শ্রেণির ফি বছরে ২৭-৩৫ লক্ষ পর্যন্ত যায়।”
তবে অন্যদিকে কেউ কেউ বলছেন, “প্রাইভেট স্কুলগুলোতে উন্নতমানের সুবিধা দেওয়া হয়, তাই খরচও বেশি হয়। এটা একটা বাজারব্যবস্থা—যদি লোকজন দিতে প্রস্তুত থাকে, তাহলে সরকার হস্তক্ষেপ করবে কেন?” অনেকে বলেছেন, এই শিক্ষা এখন কেবল ‘ঠিকানা ও নেটওয়ার্ক’-এর ওপর নির্ভরশীল, গুণগত মানের ওপর নয়।
এই বিতর্ক আরও জোরদার হয়েছে যখন কেউ লিখেছেন, “যদি ফি দিতে না পারেন, তাহলে আপনার সন্তানকে সরকারি স্কুলে দিন। সবাই যদি প্রাইভেট স্কুলে না গিয়ে সরকারি স্কুলে যেত, তাহলে হয়তো সেখানকার অবস্থাও ভালো হতো।” মোট কথা, একটি ভাইরাল ছবি আবারও শিক্ষাব্যবস্থার বৈষম্য ও বিতর্ককে সামনে এনে দিয়েছে।