আরও বেশি মনোযোগ আকর্ষণের বিষয় এই যে, জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করার আগে তিনি তাঁর প্রাক্তন স্ত্রীকে ১২০ গ্রাম সোনা এবং ১৮ লক্ষ টাকা নগদ দিয়েছিলেন। ওই ব্যক্তি তা নিয়ে একটুও আক্ষেপ করেননি, বরং গর্বই বোধ করেছেন!
advertisement
সকলকে অবাক করে দেওয়া আচার-অনুষ্ঠান
ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করা ভিডিওটিতে দেখা যায়, একজন ব্যক্তি খালি গায়ে ঘরের মেঝেতে বসে আছেন এবং তাঁর মা তাঁর গায়ে, মাথায় একটা ঘড়া থেকে দুধ ঢেলে দিচ্ছেন। এই অনুষ্ঠানটি অভিষেক নামে পরিচিত, যেখানে ভক্তরা শুদ্ধির প্রতীক হিসেবে দেবমূর্তির উপর দুধ বা জল ঢেলে দেন। এখানে এই শুদ্ধিকরণ বা অভিষেক ওই ব্যক্তির বিবাহের সমাপ্তি এবং তাঁর অবিবাহিত জীবনের সূচনা উপলক্ষে উদযাপিত হল।
এই অভিষেকের পরেও ছিল আরও আয়োজন।উদযাপনের জন্য ওই ব্যক্তিকে নতুন জামা, নতুন জুতো পরতে দেখা যায়। ভিডিওর পরের অংশে তাঁকে একটি চকোলেট কেকের সামনে বসে হাসতে দেখা যায়।
কেকের গায়ে লেখা হ্যাপি ডিভোর্স
কেকটিও যথেষ্ট নজরকাড়া, কারণ এটিতে লেখা ছিল: “হ্যাপি ডিভোর্স ১২০ গ্রাম সোনা ১৮ লক্ষ নগদ।” এক গাল হাসি দিয়ে ওই ব্যক্তি কেকটি কেটে পরিবারের সঙ্গে মুহূর্তটি উপভোগ করেন।
ভিডিওটির পাশাপাশি তিনি একটি ক্যাপশন শেয়ার করেছেন যাতে লেখা ছিল, “দয়া করে খুশি থাকুন এবং নিজেকে উদযাপন করুন- হতাশ হবেন না। ১২০ গ্রাম সোনা আর ১৮ লক্ষ নগদ নিইনি, আমি দিয়েছি। আমি অবিবাহিত, সুখী এবং স্বাধীন। আমার জীবন, আমার নিয়ম। একাই আমি সুখী।”
‘মাম্মা’স বয়’ কটাক্য থেকে শুরু করে সমর্থন, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিক্রিয়া
অনলাইনে শেয়ার হওয়ার পর থেকে ভিডিওটি ত্রিশ লক্ষেরও বেশি ভিউ পেয়েছে। এ হেন ব্যতিক্রমী উদযাপন যে সব স্পটলাইট নিজের দিকে টেনে নেবে সেটাই তো স্বাভাবিক, তবে কমেন্ট সেকশনটিও এই ব্যাপারে কিছু কম যায়নি। ‘মাম্মা’স বয়’ কটাক্ষ থেকে শুরু করে সমর্থনমূলক বার্তা পর্যন্ত এই ব্যতিক্রমী উদযাপনটি সব ধরনের রিয়্যাকশন পেয়েছে।
একজন ইউজার মন্তব্য করেছেন, “’মাম্মা’স বয়’! সে এখন আরও ভাল জায়গায় আছে,” আবার আরেকজন লিখেছেন, “মাকে তোমার গায়ে দুধ ঢালতে দেখে মেয়েটির জন্য খুশি। আমি সব কিছু বুঝতে পেরেছি।”
“আমার মনে হয় তোমার স্ত্রী একটা বিষাক্ত সম্পর্কে ইতি টেনেছে। তাকে অভিনন্দন। তুমি তোমার মায়ের সঙ্গেই থাকো,” অন্য এক ইউজার মন্তব্য করেছেন।
এই ধরনের রিয়্যাকশনের ধারাবাহিকতায় একজন ইউজার পরামর্শও দিয়েছেন নারী জাতিকে, “প্রিয় মেয়েরা, যদি তোমরা জীবনে শান্তিতে থাকতে চাও, তাহলে দয়া করে ‘মাম্মা’স বয়’ থেকে দূরে থাকো, অন্যথায় তোমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় বিপর্যয় দেখার জন্য প্রস্তুত থাকো।”
কিন্তু সব মন্তব্যই সমালোচনামূলক ছিল না, কেউ কেউ মজাও করেছেন। একজন মহিলা তাঁর নিজের গল্প শেয়ার করেছেন, “আমার শাশুড়িও এভাবে সেলিব্রেট করতেন, কিন্তু আমি ছিলাম, চলে যাইনি- আমিও কম জেদি নই।”
আরেকজন ইউজার প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন সামাজিক আচার নিয়ে, “বিয়ে ঘিরেই সব উৎসব কেন হবে?”
অনেক ইউজার ওই ব্যক্তিকে সমর্থনও করেছেন, অনেকেই তাঁকে এটিকে একটি নতুন সূচনা হিসেবে দেখার জন্য উৎসাহিত করেছেন।
“বিষণ্ণতার চেয়ে বিচ্ছেদ ভাল। তোমার জীবনের নতুন যাত্রা উপভোগ করো,” একজন ব্যক্তি লিখেছেন।
“মানসিক শান্তি বস্তুবাদী প্রত্যাশা এবং আবেশের চেয়ে অনেক ভাল। শুভকামনা। তুমি আরও ভাল কিছুর সঙ্গে জীবন শুরু করবে করবে এবং তুমি যা হারিয়েছ/ত্যাগ করেছ তার দ্বিগুণ ফিরে পাবে,” আরেক ইউজার মন্তব্য করেছেন।
এই সবের মধ্যেই ওই ব্যক্তিু আবার একই ভিডিও পোস্ট করেছেন, যেখানে তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন যাঁরা তাকে সমর্থন করেছেন এবং বিবাহবিচ্ছেদের ট্রমা থেকে বেরিয়ে আসা সকলকে অন্যদের মতামত নিয়ে চিন্তা না করে তাঁদের জীবনের নতুন সূচনাপর্ব উদযাপন করতে উৎসাহিত করেছেন।