ভগবান বিষ্ণু যে একাদশী তিথিতে এই মোহিনী রূপ ধারণ করেছিলেন, তাকে শাস্ত্র মোহিনী একাদশী নামে অভিধা দিয়েছে। চলতি বছরে ইংরেজি ক্যালেন্ডারের মতে এই একাদশী পড়েছে ২২ মে তারিখে। এই প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো, মোহিনী একাদশী ব্রতের দুই প্রকার ভেদ আছে- একটি মুখ্য মোহিনী একাদশী বা শুধুই মোহিনী একাদশী নামে পরিচিত, অন্যটি পরিচিত গৌণ একাদশী নামে। এই শ্রেণীবিভাগের মূল সূত্রটি লুকিয়ে রয়েছে আত্মসংযমের উপরে। মোহিনীর অসামান্য রূপে মুগ্ধ হয়েছিলেন শিব, দেবাদিদেবও তাঁর কামনা সংযত করতে পারেননি, তিনি বলপূর্বক সম্ভোগ করেছিলেন মোহিনীকে। সেই ঘটনা স্মরণে রেখে মোহিনী একাদশী ব্রতের পরের দিনেও সন্ন্যাসীরা বিশেষ করে পালন করেন গৌণ মোহিনী একাদশী ব্রত।
advertisement
দেখে নেওয়া যাক, শাস্ত্রমতে এই একাদশী ব্রতের পুণ্যলগ্ন, হরিবাসর এবং পারণের সময় কখন পড়েছে!
মোহিনী একাদশী তিথি শুরু হচ্ছে ২২ মে সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে। ২৩ মে সকাল ৬টা ৪২ মিনিটে মোহিনী একাদশী তিথি শেষ হচ্ছে। হরিবাসর সমাপ্ত হচ্ছে ২৩ মে সকাল ১১টা ৫৬ মিনিটে, এর পরেই ব্রতের পারণ বিধেয়। মোহিনী একাদশী ব্রতের পারণ হবে ২৩ মে দুপুর ১টা ৪০ মিনিট থেকে বিকেল ৪টে ২৫ মিনিটের মধ্যে। গৌণ মোহিনী একাদশী তিথি থাকবে ২৩ মে সারা দিন। গৌণ মোহিনী একাদশী তিথির পারণ হবে ২৪ মে ভোর ৫টা ২৬ মিনিট থেকে সকাল ৮টা ১১ মিনিটের মধ্যে।
বলা হয় যে এই একাদশী ব্রত পালন করে রাজা যুধিষ্ঠির লাভ করেছিলেন অতুল ঐশ্বর্য, সাধারণ মানুষেরও জীবনও বিষ্ণুর কৃপায় সুখ-সম্পদ-যশে পরিপূর্ণ হয়, যেমনটা অমৃতলাভে দেবতাদের ক্ষেত্রেও হয়েছিল। জেনে নেওয়া যাক এই ব্রত কী ভাবে পালন করতে হয়!
সকালে তিল এবং দূর্বামিশ্রিত জলে স্নান সেরে শুদ্ধবস্ত্রে ব্রত পালনের সঙ্কল্প করতে হবে। এর পর ভগবান বিষ্ণুর মূর্তি বা ছবির সামনে একটি প্রদীপ জ্বেলে দিতে হবে। তুলসী, ফুল, চন্দন, তিল এবং ফল অর্পণ করতে হবে ভগবান বিষ্ণুকে। সারা দিন বিষ্ণুর নামগান সঙ্কীর্তন করতে বা শুনতে হবে। রাতে ঘুমানো চলবে না। পরের দিন পারণের সময়ে ব্রাহ্মণকে দান করে ব্রত এবং উপবাস ভঙ্গ করতে হবে।
যাঁরা গৌণ মোহিনী একাদশী করবেন, তাঁদের কয়েকটি বিষয় মেনে চলতে হবে:
*খাদ্যগ্রহণ করা যাবে কেবল কাঁসার বাসনে।
*আমিষ, মুসুর ডাল, ছানা, মধু খাওয়া যাবে না।
*এই দিন পান খাওয়া যাবে না।
*জুয়া খেলা থেকে বিরত থাকতে হবে।