আজ জ্যৈষ্ঠ মাসের কৃষ্ণপক্ষের শেষ দিন অর্থাৎ চতুর্দশী তিথি পড়ছে। সকাল ১১টা ২৪ মিনিট পর্যন্ত থাকবে ত্রয়োদশী, এর পরে শুরু হয়ে যাবে কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথি। আগামীকাল শুরু হয়ে যাবে অমাবস্যা। তাই আজকের তিথিতে উদযাপিত হচ্ছে মাসিক শিবরাত্রি ব্রত। শাস্ত্র মতে আজ রাত ১২টা থেকে ১২টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত রয়েছে পুণ্যলগ্ন, এর মধ্যেই মাসিক শিবরাত্রিবিহিত পূজাপ্রদান বিধেয়।
advertisement
মহাশিবরাত্রির মতো মাসিক শিবরাত্রিতে রাতের চারটি প্রহরে চারটি শিবলিঙ্গ নিজে হাতে গঙ্গামৃত্তিকা দিয়ে প্রস্তুত করে আরাধনার বিধান নেই। মাসিক শিবরাত্রিতে পঞ্জিকা নির্ধারিত নির্দিষ্ট লগ্নে একবার ভক্তিভরে পূজাতেই সর্ব মনোকামনা পূর্ণ হয়।
আসলে মহাশিবরাত্রি এবং মাসিক শিবরাত্রির মধ্যে দুই দিক থেকে তফাত আছে। যদি আমরা পৌরাণিক আখ্যানের সূত্র ধরি ব্যাখ্যা করি, তাহলে দেখব যে মহাশিবরাত্রির দিন পার্বতীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন শিব, এই তিথিতেই অর্থাৎ ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশীতে তিনি প্রথম দেখা দিয়েছিলেন স্বয়ম্ভূ লিঙ্গ রূপে, আবার এই তিথিতেই সমুদ্রজাত কালকূট বিষ পান করেছিলেন তিনি। কিন্তু মাসিক শিবরাত্রি অর্থাৎ যে কোনও মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথি শিব আর শিবানীর একই শরীরে লীন হওয়ার পুণ্য মুহূর্ত, যে রূপকে অর্ধনারীশ্বর বলে উল্লেখ করেছে পুরাণ।
অন্য দিকে, পূজাপদ্ধতির সূত্র ধরেও মহাশিবরাত্রি এবং মাসিক শিবরাত্রির একটি পার্থক্য আছে। মহাশিবরাত্রিতে রাতের চার প্রহরে শিবের চার ভিন্ন রূপের উপাসনা করতে হয়। কিন্তু মাসিক শিবরাত্রির পূজা সম্পন্ন করতে হয় নিশীথকালে। পঞ্জিকা মতে আজ নিশীথ কাল শুরু হচ্ছে রাত ১২টা ০০ মিনিট থেকে, শেষ হচ্ছে রাত ১২টা ৪০ মিনিটে। তাই এই ব্রত উদযাপন করতে চাইলে এই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শিবলিঙ্গ স্থাপন করে গঙ্গাজল, দুধ, দই, ঘি, মধু, সিঁদুর, হলুদগুঁড়ো, গোলাপজল দিয়ে অভিষেক করিয়ে বেলপাতা নিবেদন করতে হয়।
যে কোনও ব্রতের সঙ্গেই উপবাস এবং পারণ বা উপবাসভঙ্গের একটি বিধি থাকে। এক্ষেত্রে আজ সকাল থেকেই উপবাস পালন করতে হবে। সেই মতো মাসিক শিবরাত্রি ব্রতের পারণ হবে ৯ জুন সকালে।
বলা হয়, জীবনের যাবতীয় কষ্ট থেকে মুক্তি দেয় এই মাসিক শিবরাত্রি ব্রত উদযাপন, এটি মোক্ষপ্রাপ্তিরও সহায়ক।