আরও পড়ুন– ইন্ডিগোর বিমানে বোমাতঙ্ক ! কুয়েত থেকে হায়দরাবাদগামী ফ্লাইটের জরুরি অবতরণ মুম্বইয়ে
এ কিন্তু একেবারে সত্যি ঘটনা। আসলে আমরা আমাদের চারপাশে এমন নানা গল্প শুনি যা অবিশ্বাস্যরকম অদ্ভুত। কিছু গল্প এতটাই অদ্ভুত যে তা সত্যিই ঘটতে পারে আমরা আগে কখনও ভাবিনি। পূর্ব রোমানিয়ার বাকাউ অঞ্চলে এমনই ঘটনা ঘটেছিল, যেখানে গবাদি পশুপালনকারী এক কৃষক হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যান। ১৯৯১ সালে ভাসিল গর্গস নামে ৬৩ বছর বয়সী একজন কৃষক তাঁর খামার এবং গবাদি পশুর দেখভালের জন্য বেরিয়েছিলেন। তিনি মাঝে মাঝেই সেখানে যেতেন, ফলে তাঁর ট্রেনের টিকিটও কিনেছিলেন এবং তাঁর পরিবারকে বলেছিলেন যে তিনি এক বা দুই দিনের মধ্যে ফিরে আসবেন। কিন্তু এর পর যা ঘটেছিল তা রহস্যই রয়ে গিয়েছে।
advertisement
আরও পড়ুন– দক্ষিণবঙ্গে ধীরে ধীরে কমবে তাপমাত্রা, রাজ্যে জাঁকিয়ে শীত কবে? জেনে নিন আবহাওয়ার আপডেট
বলা হয় যে ভাসিল গর্গস আর বাড়ি ফিরে আসেননি, যার ফলে পুলিশ এবং গ্রামবাসীরা যৌথভাবে তল্লাশি চালায়। ট্রেনে তল্লাশি চালানো হয়, আশেপাশের এলাকায় তল্লাশি চালানো হয়, কিন্তু ৩০ বছর ধরেও তাঁর কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। ধীরে ধীরে পরিবার বিশ্বাস করতে শুরু করে যে ভাসিল আর কখনও ফিরে আসবেন না, কেউ কেউ তাঁর আত্মার শান্তির জন্য প্রার্থনা সভার আয়োজনও করেন। কেউ আশা করেননি যে তিনি ফিরে আসবেন, কিন্তু একদিন ঠিক সেই অলৌকিক ঘটনাই ঘটে।
৩০ বছর পর যা ঘটেছিল…
তিন দশক পর, ২০২১ সালের ২৯ অগাস্ট সন্ধ্যায়, হঠাৎ ভাসিলের বাড়ির সামনে একটি গাড়ি এসে থামে। গাড়ি থেকে যিনি বেরিয়ে আসেন, তিনি ভাসিল ছাড়া আর কেউ নন। আশ্চর্যজনকভাবে তাঁর পরনে ছিল ১৯৯১ সালে সেই পুরনো পোশাক যা পরে তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। তাঁর পকেটে এখনও সেই তিন দশকের পুরনো ট্রেনের টিকিট ছিল, যা তিনি ব্যবহারও করেনি। যখন তাঁর পরিবার জিজ্ঞাসা করে যে এত বছর তিনি কোথায় ছিলেন, তখন ভাসিল শুধু এটুকু উত্তর দেন, “আমি বাড়িতে ছিলাম।” আরও যা আশ্চর্যজনক- এই ৩০ বছরেও তাঁর বয়স খুব একটা বাড়েনি, চেহারায় তার কোনও ছাপ নেই!
রহস্যটা আসলে কী?
ডাকা হয় স্বাভাবিক ভাবেই ডাক্তারদের। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় দেখা যায় যে ভাসিলের বয়স এখন ৯৩ বছর, তবুও তিনি তাঁর বয়সের তুলনায় সুস্থ ছিলেন। স্মৃতিশক্তি হ্রাস ছাড়া তাঁর কোনও গুরুতর অসুস্থতা ছিল না। তিনি তাঁর শৈশব, তাঁর পরিবার, তাঁর খামার এবং ১৯৯১ সালের আগের জীবনের কথা স্পষ্টভাবে মনে রেখেছিলেন, কিন্তু ১৯৯১ সালের পরের ৩০ বছর তার জন্য এক অন্ধকারের মতো ছিল, যা তিনি একেবারেই মনে রাখতে পারেননি। তাঁর হঠাৎ ফিরে আসা তাঁর পরিবার এবং প্রতিবেশীদের হতবাক করে দিয়েছিল, সত্যি বলতে কী তাঁরা একটু হলেও ভয় পেয়েছিলেন। কীভাবে কেউ ৩০ বছর ধরে নিখোঁজ থাকার পরে ফিরে আসতে পারেন, যেখানে তিনি কোথায় আছেন বা তিনি কী করছেন, তা কেউ জানেন না!
কেউ কেউ বিশ্বাস করেন যে তিনি হয়তো তাঁর বাবা-মা এবং সন্তানদের ছেড়ে অন্য জীবনযাপন করেছিলেন, হয়তো কারাগারে অথবা অন্য দেশে। কিন্তু তাঁর পুরনো পোশাক এবং ট্রেনের টিকিট কীভাবে একই রয়ে গেল? যে গাড়িতে করে তিনি বাড়ি ফিরেছিলেন, লোকেরা তাঁকে সেই গাড়িটি সম্পর্কেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল, কিন্তু এটি এত দ্রুত চলে যায় যে কেউ তার নম্বর প্লেট দেখতে পায়নি। সোশ্যাল মিডিয়া বর্তমানে এই প্রসঙ্গে টাইম ট্র্যাভেলের কথা তুলছে, আবার কেউ কেউ প্যারালাল ওয়ার্ল্ডের তত্ত্ব খাড়া করতে চাইছে। তবে, ভাসিলের সঙ্গে ঠিক কী যে হয়েছিল, সেই সত্যটি এখনও অজানাই রয়ে গিয়েছে।
