মহাশিবরাত্রির ব্রতকথায় আছে যে এক ব্যাধ সারা দিন কোনও শিকার পায়নি। শিকারের সন্ধানে ঘুরতে ঘুরতে সে চলে এসেছিল গভীর অরণ্যে। পথ হারিয়ে রাতে প্রচণ্ড ঝড়-জলে আশ্রয় নিয়েছিল এক বেল গাছে। ক্ষুধার চোটে সে সময় কাটানোর জন্য একটি একটি করে বেলপাতা ছিঁড়ে নিচে ফেলছিল। জানত না, গাছের তলাতে রয়েছে শিবলিঙ্গ। অজান্তে এভাবে ভগবানকে বেলপাতা অর্পণ করেও সে মৃত্যুর পরে প্রাপ্ত হয়েছিল শিবলোক, তাকে নরকদর্শন করতে হয়নি।
advertisement
এই প্রসঙ্গে একটি কথা না বললেই নয়- স্বাস্থ্য যদি অটুট না থাকে, তাহলে রোগযন্ত্রণা এই জীবনকে করে দিতে পারে নরকবাসের তুল্য। তাই দেখে নেওয়া যাক বেলপাতার ওষধিগুণ আমাদের কী কী উপকারে আসে!
১. বেলপাতায় আছে ভিটামিন B1, B6 এবং B12, যা শরীরের সার্বিক বৃদ্ধির পক্ষে একটি প্রয়োজনীয় উপাদান।
২. আয়ুর্বেদে আমাদের শরীরের তিনটি দোষকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। এরা হল বাত, পিত্ত এবং কফ। নিয়মিত বেলপাতার সেবন এই তিন দোষ থেকে শরীরকে মুক্তি দেয়।
৩. ডায়াবেটিস, হাইপার টেনশন নিবারণ করে বেলপাতা। ভালো রাখে হার্ট। পাশাপাশি, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও কাজে আসে।
৪. ঘামের দুর্গন্ধ, র্যাশের সমস্যায় কাজে আসে বেলপাতা বাটার প্রলেপ। নিয়মিত ভাবে দিনকয়েকের ব্যবহারেই সুফল পাওয়া যায়।
৫. বেলপাতার রস নিয়মিত খেলে চুল পড়ার সমস্যা মিটে যায়, রুক্ষ চুল হয় কোমল।
৬. অনেক সময়ে আমাদের ত্বকে নানা সাদা ছোপ পড়ে। বেলপাতা বাটার প্রলেপ সেই ছাপ তুলতেও অব্যর্থ ফল দেয়।
এছাড়া বাস্তুদোষ কাটাতে, জীবনকে সুখে পরিপূর্ণ করতে কাজে আসে বেলপাতার আধ্যাত্মিক শক্তি। বাস্তুশাস্ত্র মতে বাড়িতে বেল গাছ থাকলে তা যাবতীয় নেতিবাচক শক্তিকে গৃহে প্রবেশে বাধা দেয়, সংসারকে মঙ্গলময় করে। বলা হয়, প্রতি সন্ধ্যায় বেল গাছের নিচে একটি প্রদীপ দিলে তা জ্ঞানবৃদ্ধির সহায়ক হয়। ভগবান শিব স্বয়ং দক্ষিণমূর্তি রূপে এই বেলগাছের তলাতেই বেদের সবিস্তার ব্যাখ্যা করেছিলেন ঋষিদের কাছে।