কলকাতাতে রয়েছে চাইনিজ কালী মন্দির৷ ট্যাংরা এলাকার চায়না টাউনের এই মন্দির খুবই প্রসিদ্ধ (Chinese Kali Temple in Tangra)৷ কলকাতার চিনা পাড়ার আলাদই ঐতিহ্য রয়েছে৷ তিব্বতি স্টাইলের অলিগলিতে পুরনো কলকাতা মেজাজ ধরা পড়ে৷ একই সঙ্গে এখানে পূর্ব এশিয়ার ছাপও রয়েছে৷ সঙ্গে অবশ্যই রয়েছেন চিনা খাবারের হাতছানি৷ সন্ধে নামতেই চিনা খাবারের জন্য যেখানে ভিড় করেন বহু মানুষ৷ করোনার সময় থেকে পরিস্থিতি কিছুটা বদলেছে৷ তবে বদলায়নি এখানকার কালীমন্দিরের নিত্য পুজোর রীতি৷ এবং সেখানেই পুজোর পর প্রসাদের জন্য হাত পাতলে পাওয়া যায় চাইনিজ খাবার৷ মাকে পুজো দেওয়া হয় নুডলস, চপসয়ে, ভাত এবং সবজি দিয়ে৷
advertisement
মন্দিরের পুজারী বাঙালি, হিন্দু৷ অশুভ শক্তিকে দূরে রাখতে পড়ানো হয় হাতে তৈরি কাগজ৷ দিওয়ালির সময় জ্বালানো হয় লম্বা মমবাতি সঙ্গে চিনা ধূপ৷ শুধু প্রসাদেই ফারাক নয়, এই কালী মন্দিরে প্রবেশ করলেই টের পাওয়া যাবে অন্যান্য কালী মন্দিরের সঙ্গে এর তফাত৷
আরও পড়ুন মুসলিম মহিলাদের শরীর ঢাকা পোশাক কী কী? বোরখা-হিজাব-নিকাবের পার্থক্য জানুন
প্রায় ২০ বছর আগে এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয় ট্যাংরা অঞ্চলে৷ চিনা ও বাঙালিরা মিলেমিশেই তৈরি করেন এই মন্দির৷ মন্দির প্রতিষ্ঠার আগে এই জায়গায় একটি গাছের তলায় মূর্তি পুজো হত৷ দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে গাছের তলাতেই ধুমধাম করে হত পুজো৷ এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন যে, একবার এক চিনা বালকের শরীর খারাপ হয়৷ কোনও চিকিৎসাই কাজে আসছিল না৷ শেষ পর্যন্ত চিকিৎসায় সব আশা ছেড়ে তাঁর বাবা-মা এসে মানত করেন দেবীর কাছে৷ গাছের তলায় শুইয়ে রাখা হয় তাঁদের অসুস্থ ছেলেকে৷ ধীরেধীরে সে সুস্থ হয়ে ওঠে৷ তারপর থেকেই চিনাদের বিশ্বাস বেড়েছে৷ এবং পরবর্তীতে মন্দির প্রতিষ্ঠাতে এগিয়ে আসেন তারাও৷ ফলে কলকাতার বুকেই তৈরি হয় চিনা কালী মন্দির৷ এই মন্দিরে নিয়মিত আসেন এলাকার চিনা বাসিন্দারা৷ তাঁরা প্রণাম করেন, পুজোতে অংশও নেন৷ এখানে হিন্দু ও চিনাদের মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই৷ সকলেই ভক্তি ভরে মায়ের পুজো করেন৷