TRENDING:

খনিতে মজুত থাকা সত্ত্বেও রেয়ার আর্থ এলিমেন্ট কেন উৎপাদন করতে পারছে না ভারত? আর গোটা বিশ্বে সকলকে পিছনে ফেলে সর্বাগ্রে কেন জায়গা করে নিতে পেরেছে চিন? জানুন বিশদে

Last Updated:

সারা বিশ্বের প্রায় ৭০ শতাংশ মিনারেলের আধার চিন। আর তার ৯০ শতাংশই তারা রিফাইন বা পরিশোধন করে। যার অর্থ হল, এর জন্য আবার চিনের উপর অত্যন্ত বেশি পরিমাণে নির্ভরশীল সারা বিশ্ব।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
নয়াদিল্লি: মানুষের বেঁচে থাকার জন্য যেমন খাদ্যশস্যের প্রয়োজন হয়, ঠিক তেমন ভাবেই আজকালকার প্রযুক্তির দুনিয়ায় রেয়ার আর্থ এলিমেন্টস (আরইই) খুবই জরুরি। ইলেকট্রিক গাড়ি, মোবাইল ফোন, ডিফেন্স ইক্যুইপমেন্ট, উইন্ড টার্বাইনের মতো উচ্চ-প্রযুক্তির সরঞ্জামে এই ধরনেপ এলিমেন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে। আর এক্ষেত্রে পুরোভাগে একেবারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে চিন। সারা বিশ্বের প্রায় ৭০ শতাংশ মিনারেলের আধার চিন। আর তার ৯০ শতাংশই তারা রিফাইন বা পরিশোধন করে। যার অর্থ হল, এর জন্য আবার চিনের উপর অত্যন্ত বেশি পরিমাণে নির্ভরশীল সারা বিশ্ব।
খনিতে মজুত থাকা সত্ত্বেও রেয়ার আর্থ এলিমেন্ট কেন উৎপাদন করতে পারছে না ভারত? (Representative Image)
খনিতে মজুত থাকা সত্ত্বেও রেয়ার আর্থ এলিমেন্ট কেন উৎপাদন করতে পারছে না ভারত? (Representative Image)
advertisement

আরও পড়ুন– নর্থ-ইস্টে হানিমুনে যাওয়া দম্পতিরাই কি টার্গেট? সোনম-রাজার সঙ্গে কী হয়েছে সবারই জানা উচিত

তবে এক রাতেই এই স্থান দখল করেনি চিন। সেই ১৯৯০-এর দশকে তারা কৌশলগত ভাবে এই এলিমেন্ট বা উপাদানকে গুরুত্বপূর্ণ বলে গণ্য করেছিল। আর সেই অনুযায়ী তারা নীতি, প্রযুক্তি এবং পলিসিতে পরিবর্তন এনেছিল। বিশ্বের মধ্যে সবথেকে বড় আরইই আধার রয়েছে চিনেরই। সস্তার শ্রম এবং শিথিল পরিবেশগত নীতির জেরে সেখানে সস্তায় উৎপাদন করা সম্ভব। চিনে সস্তায় বিদ্যুৎ পাওয়া যায়। যা রিফাইনিংয়ের মতো এনার্জি-ইন্টেনসিভ কাজে সহায়তা প্রদান করে। এর পাশাপাশি এই প্রযুক্তিতে চিন দক্ষতা অর্জন করেছে। সেখানকার প্রায় ৩৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করা হয়েছিল। তুলনায় সেখানে বিশ্বের সবথেকে উন্নত দেশ আমেরিকায় এ নিয়ে একটাও কোর্স করানো হয় না।

advertisement

অনেক সময় চিন এই মিনারেলগুলিকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। ২০১০ সালে তারা জাপানে এর রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে। এতে গোটা বিশ্ব এটা বুঝতে পেরেছে যে, এই মিনারেলগুলি আর শুধু প্রযুক্তিগত জিনিসই নয়, এগুলি আসলে কৌশলগত অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে।

আরও পড়ুন– রাফাল, F-35 বা সুখোই-57 নয়, ভারতের নজর এখন এই যুদ্ধবিমানের দিকে, ঢেলে সাজবে বাহিনী

advertisement

ভারতের সমস্যাটা ঠিক কোথায়?

অন্যদিকে, ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলিকে একাধিক প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়। যদিও এই দেশগুলিতে ভালই এই এলিমেন্ট মজুত রয়েছে। কিন্তু সেগুলি বার করা এবং পরিশোধন করা অতটাও সহজ নয়। মাটির তলা থেকে এই এলিমেন্টগুলি বার করে আনার সময় কিন্তু তেজস্ক্রিয় উপাদানের সম্মুখীন হতে হয়। আর এই তেজস্ক্রিয় উপাদানগুলিই পরিবেশ এবং স্বাস্থ্য উভয়ের জন্য বিপদ ডেকে আনে। এদিকে ভারত এবং আমেরিকায় পরিবেশগত নীতি খুবই কঠোর। যার জেরে এই প্রকল্পগুলিও মহার্ঘ্য হয়ে যায়।

advertisement

প্রক্রিয়াকরণের জন্য চিনের উপর নির্ভরশীল ভারত:

ভারতে রয়েছে প্রায় ৬.৯ মিলিয়ন টন আরইই। কিন্তু ২০২৪ সালে উৎপাদিত হয়েছে মাত্র ২৯০০ টন। সারা বিশ্বের পরিমাণের তুলনায় মাত্র ১ শতাংশ। কেরলের কোচি এলাকার মোনাজাইট স্যান্ড থেকে এগুলি আহরণ করা হয়। কিন্তু এখানে মাইনিং এবং প্রক্রিয়াকরণের সুবিধা খুবই সীমিত। এছাড়াও স্থানীয় জনগণের বিরোধিতা এবং পরিবেশগত উদ্বেগও একটা বড় কারণ হয়ে উঠেছে। ভারতের বেসরকারি কোম্পানিগুলিও এই খাতে খুব কম সক্রিয়। বেশিরভাগ কাঁচামালই পাঠানো হয় চিনে। সেখানেই পরিশোধন করা হয়। সেই কারণেই চিন থেকে ৯৯ শতাংশ ম্যাগনেট এবং ব্যাটারি আমদানি করে ভারত।

advertisement

আর চিনের উপর এই নির্ভরশীলতার কারণে ভারতের ইলেকট্রিক ভেহিকেল (ইভি) সেক্টরও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। Maruti এবং Bajaj-এর মতো বহু ভারতীয় সংস্থাই সম্পূর্ণ মোটর অ্যাসেম্বলি বিদেশ থেকেই আমদানি করে। যার জেরে এর দামও অনেকটাই বেড়ে যায়। ভারত সরকার এই বিষয় নিয়ে এবার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২৪-২৫ থেকে জানা গিয়েছে যে, চিনের উপর এই নির্ভরশীলতা কিন্তু বিপদ ডেকে আনছে। আর সরকারও সংশ্লিষ্ট সেক্টরে অংশগ্রহণ করার জন্য বেসরকারি সংস্থাগুলিকে উৎসাহ প্রদান করছে। তবে এর ফলাফল আসার জন্য বেশ সময় লাগবে।

আমেরিকায় উৎপাদন কম:

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরিস্থিতি অনেকটাই ভারতের মতো। সেখানে একটাই মাত্র খনি রয়েছে। যার নাম মাউন্টেন পাস। যা ২০২৪ সালে ৪৫ হাজার টন উৎপাদন করেছে। তবুও আমেরিকা নিজেদের চাহিদার ৭০ শতাংশেরও বেশি চিন থেকে আমদানি করে। এর আগে অবশ্য এই ক্ষেত্রে এগিয়ে ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু সস্তা দাম এবং পরিবেশগত নীতির শিথিলতার কারণে আমেরিকাকে পিছনে ফেলে দিয়েছে চিন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এখনও পর্যন্ত পর্যাপ্ত রিফাইনিংয়ের কোনও সুবিধা নেই। সেই সঙ্গে প্রযুক্তিরও ঘাটতি রয়েছে। কিছু নতুন রিফাইনিং প্ল্যান্ট অবশ্য শুরু হচ্ছে। যেমন – টেক্সাসের এমপি মেটেরিয়ালস ফেসিলিটি। কিন্তু এর উৎপাদন চিনের তুলনায় অনেকটাই কম।

চিন এই প্রযুক্তি বিক্রিও করছে না:

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
ইউটিউব দেখেই কামাল করছে এই কিশোর, দেখলে আপনিও চোখ সরাতে পারবেন না
আরও দেখুন

চিন এখন তার পরিশোধন প্রযুক্তি অন্য দেশের কাছে বিক্রি করতে চাইছে না। এই পর্যায়ে চলে গিয়েছে তাদের সিদ্ধান্ত। আর এটাই অন্যান্য দেশের অগ্রগতিকে আরও বাধাগ্রস্ত করবে। আমেরিকা এবং ভারতের বর্তমানে নিজ নিজ দেশে এই খাতে বিনিয়োগের প্রয়োজন রয়েছে। সেই সঙ্গে প্রযুক্তি আনতে হবে এবং পরিবেশগত নীতিতে ভাল সমাধানের খোঁজ করতে হবে। এর পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া এবং ভিয়েতনামের মতো দেশগুলির সঙ্গে অংশীদারিত্ব এবং পুনর্ব্যবহারকে উৎসাহিত করাও গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলা খবর/ খবর/পাঁচমিশালি/
খনিতে মজুত থাকা সত্ত্বেও রেয়ার আর্থ এলিমেন্ট কেন উৎপাদন করতে পারছে না ভারত? আর গোটা বিশ্বে সকলকে পিছনে ফেলে সর্বাগ্রে কেন জায়গা করে নিতে পেরেছে চিন? জানুন বিশদে
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল