বলা হয়, এই অমাবস্যা তিথিতে ক্ষণিকের জন্য খুলে যায় স্বর্গ এবং নরক এই দুইয়েরই দ্বার। আর আমাদের জন্য তার যে কোনও একটি নির্দিষ্ট হয় কর্মফলের উপরে ভিত্তি করে, বিশেষত এই অমাবস্যা তিথিতে আমরা কী করেছি, তার উপরে ভিত্তি করে। দেবী তারা অল্পতুষ্টা, কিন্তু মহাঋষি বশিষ্ঠকে রীতিমতো নিয়ম মেনে তাঁকে সাধনা করতে হয়েছিল তারাপীঠে, তবেই আবির্ভূতা হয়েছিলেন দেবী। তাই এই কৌশিকী অমাবস্যায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কী কী করা উচিত আর কী একেবারেই পরিহার করা উচিত, জেনে রাখা জরুরি।
advertisement
শুচিতা
যে কোনও সাধনারই মূল কথা হল শুচিতা- শুধু নিজের নয়, একই সঙ্গে স্থানেরও। তাই এই দিন যেমন নিজেকে, তেমনই পরিষ্কার রাখতে হবে ঘরবাড়ি। সকালে উঠে ঘর ধুয়ে-মুছে স্নান করে নিতে পারলে ভাল, না হলে দিনের যে কোনও সময়েই তা করে নেওয়া যায়। এর পরেই শুরু হবে আরাধনা।
আরও পড়ুন- আর নয় কেষ্ট, এবার তিন বিধানসভার সংগঠন দেখবেন পূর্ব বর্ধমান নেতৃত্ব
সিঁদুর, জবা
মহাতিথির পূজায় কিন্তু মহা আড়ম্বরের প্রয়োজন নেই। শুধুমাত্র সিঁদুর আর জবাফুল দেবীর পায়ে অর্পণ করলেই হল। চাইলে ওম তারে তুত্তারে তুরে স্বাহা বীজমন্ত্র জপ করা যায়।
আহারে সংযম
তন্ত্রের মূল ভিত্তি পঞ্চ ম-কার। সেই রীতি মেনে মায়ের ভোগে তারাপীঠে অবশ্যই দেওয়া হবে মৎস্যভোগ, নিবেদন করা হবে মদ। কিন্তু তন্ত্রে এর রয়েছে দার্শনিক গুরুত্ব। তাই দেবীকে দেওয়া হচ্ছে বলেই আমরা কিন্তু এদিন মাছ বা আমিষ, মদ কোনওটাই গ্রহণ করতে পারব না। উপবাসে থাকতে পারলে ভাল, না হলে নিরামিষ আহারে সংযম পালন করতে হবে।
শারীরিক সংযম
পঞ্চ ম-কারের অন্যতম হল মৈথুন। কিন্তু গৃহস্থ যেহেতু তন্ত্রমতে আরাধনা করেন না, তাই এই তিথিতে শারীরিক সংযমে নিজেকে বাঁধতে হবে। মৈথুনে লিপ্ত হওয়া যাবে না। দৈবাৎ লিপ্ত হলে তা জীবনে বিড়ম্বনা ডেকে আনবে, গর্ভে সন্তান এলে তার জীবনও হয়ে উঠবে অশুভ।
আরও পড়ুন- ত্রিপুরায় কি শেষ বিপ্লব দেব জমানা? রাজনৈতিক মহলে শুরু চর্চা
দূরে যাত্রা নয়
বলা হয়, এই রাতে গর্ভবতীদের বিশেষ করে বাইরে বের হতে নেই, দূরে যাত্রাও সবার জন্য মঙ্গলদায়ক নয়। গেলে সঙ্গে রাখতে হবে তুলসিপাতা।
দীপদান
দীপাবলি অমাবস্যার মতো কৌশিকী অমাবস্যাতেও দীপদানের রীতি আছে। এক্ষেত্রে দুটি তিলের তেলের প্রদীপ সন্ধ্যায় রাখতে হয় বাড়ির দরজার দুই পাশে, তা অশুভ শক্তিকে গৃহে প্রবেশে বাধা দেয়।
গোপন আচার
বলা হয়, একটি জলশূন্য নারকেল নিয়ে, তাতে একটি ফুটো করে, সেই ফুটোর মধ্যে দিয়ে নারকেলে চিনি ভরে, ফুটো উপরের দিকে রেখে নারকেলটা যদি বাড়ি থেকে কিছু দূরে পুঁতে দেওয়া যায়, তবে জীবন থেকে সব বাধা দূর হয়। অসুবিধা হল- এই আচার পালন করতে হবে গোপনে, কেউ দেখে ফেলে লাভ হবে না।
দুধদান
দীপদানের মতোই কৌশিকী অমাবস্যায় যদি কোনও কুয়ো বা গর্তে এক চামচ দুধ নিবেদন করা যায়, তবে তা জীবনে মঙ্গল বয়ে আনে।