বলা হয়, এই শ্রাবণ মাসের শুরুতেই দেবাসুরের সম্মিলিত প্রয়াসে শুরু হয়েছি সমুদ্রমন্থনের উদ্যোগ। মন্থন চলছিল দুর্দান্ত গতিতে, ক্ষীরসমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠেছিল মন্থনদণ্ডের ঘর্ষণে। সেই সময়েই সমুদ্রের তলদেশ তোলপাড় করে উঠে আসে মহাগরল কালকূট। সেই বিষের ধোঁওয়ায় সৃষ্টি উৎসন্নে যেতে বসেছিল। দেবতা, অসুর এবং সৃষ্টির সমুদায় জীবনকে রক্ষা করার জন্য কালকূট পান করেছিলেন ভগবান শিব। মাতা পার্বতী এই সময়ে হাত দিয়ে তাঁর কণ্ঠ চেপে ধরায় বিষ সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারেনি, তা গলায় আটকে যায়। কিন্তু বিষের প্রভাবে শিবের কণ্ঠদেশ নীলবর্ণ ধারণ করে, তাঁর নাম হয়ে যায় সেই থেকে নীলকণ্ঠ। উপরন্তু বিষের দারুণ দহনে তাঁর সর্বাঙ্গে তীব্র জ্বালা শুরু হয়। লোকবিশ্বাস, সেই বিষতাপ প্রশমনের জন্য দেবতারা কলসে করে সমুদ্রের জল এনে তাঁর অভিষেক করেছিলেন যাতে শরীর শান্ত হয়। সেই ঘটনা স্মরণে আজও শ্রাবণ মাসের চারটি সোমবারে ভক্তেরা বাঁকে করে গঙ্গাজল নিয়ে গিয়ে কোনও শিবমন্দিরে লিঙ্গাভিষেক সম্পন্ন করেন।
advertisement
বাঁক কথাটিকে হিন্দিতে বলা হয় কানওয়ার, সেই অনুসারে এই তীর্থগমন সুপরিচিত কানওয়ার যাত্রা নামে। চলতি বছরে ২৫ জুলাই থেকে এই যাত্রা শুরু হবে, শেষ হবে ২২ অগস্ট। জুলাই ২৬, অগস্ট ২, অগস্ট ৯ এবং অগস্ট ১৬- এই চার তারিখ শ্রাবণ সোমবার হিসাবে এই বছরে পঞ্জিকা মতে স্বীকৃতি পেয়েছে। এই প্রসঙ্গে যাত্রার কিছু নিয়ম স্মরণে রাখা প্রয়োজন-
১. যাত্রাকালীন প্রসাধনী বা রূপসজ্জা বর্জনীয়।
২. যাত্রা করতে হবে দলবদ্ধ হয়ে।
৩. বাঁক মাথায় বহন করা যাে না, রাখা যাবে না গাছের নিচে।
৪. যাত্রা শুরু পূর্বে স্নান করে শুদ্ধ হয়ে নিতে হবে।
৫. যাত্রাপথে মদ, আমিষ, পেঁয়াজ, রসুন খাওয়া চলবে না।