দৈনিক ভাস্কর-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, উত্তর প্রদেশের কানপুরের বর্রা এলাকার বাসিন্দা ভূপেন্দ্র সিং। গত ৬ মার্চ তাঁর কাছে একটি ফোন কল আসে। নিজেকে সিবিআই অফিসার পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি বলেন, “আপনি ফোনে অশ্লীল ভিডিও দেখেন। এক মহিলা এফআইআর দায়ের করেছেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই আপনার বাড়িতে পুলিশ যাচ্ছে।“ ৩২টি মর্ফ ভিডিও এবং ৪৮টি মর্ফ ছবিও ভূপেন্দ্রকে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠান তিনি।
advertisement
আরও পড়ুন– বান্ধবীকে বিয়ে করতে চান, লিঙ্গ পরিবর্তনের আবেদন দিল্লি পুলিশের মহিলা কনস্টেবলের
ভূপেন্দ্র বুঝে যান, সিবিআই, পুলিশ কেউ নয়। আসলে জালিয়াত। তাঁর কাছ থেকে এবার টাকাপয়সা হাতানোর চেষ্টা করবে। সঙ্গে সঙ্গে নতুন গল্প ফাঁদেন ভূপেন্দ্র। শুধু তাই নয়, এমন ভাবে ফাঁদ পাতেন, প্রতারক নিজেই হাজার খানেক টাকা দিয়ে বসেন ভূপেন্দ্রকে।
কাঁচুমাচু সুরে ভূপেন্দ্র ফোনে বলেন, “ আঙ্কেল, এসব কথা মাকে বলবেন না প্লিজ। তাহলে খুব বিপদে পড়ব।“ ভুপেন্দ্রর মা কয়েক বছর আগেই মারা গিয়েছেন। যাইহোক প্রতারক তখন বলেন, “এফআইআর হয়ে গিয়েছে, এখন মামলা বন্ধ করতে ১৬ হাজার টাকা লাগবে।“
ফোনের অপর প্রান্তে কিছুক্ষণ চুপচাপ থাকেন ভূপেন্দ্র। তারপর কান্না ভেজা গলায় বলেন, “টাকা জোগাড় করার চেষ্টা করছি। আমাকে একটু সময় দিন।“ পরেরদিন ফের ফোন আসে, “কী হল, টাকা কবে দেবেন?” ভূপেন্দ্র বলেন, “কয়েকদিন আগে বাড়ি থেকে একটা সোনার চেন চুরি করেছিলাম। আমার বন্ধুর বাবা স্বর্ণকার, তাঁকেই বিক্রির জন্য দিয়েছি। ৪০ হাজার টাকা পাব। পুরো টাকাটাই আপনাকে দিয়ে দেব।“
এ কথা শুনে আশ্বস্ত হন প্রতারক। আর কিছু বলেন না। পরদিন ফোন করলে ভূপেন্দ্র বলেন, “বন্ধুর বাবা পুরো টাকা দিতে চাইছে না। বলছে, আগে ৩ হাজার টাকা দিতে হবে। আমি ছাত্র, এই টাকা কোথায় পাব? আপনি যদি আমাকে ৩ হাজার টাকা দেন, তাহলে টাকা পেলেই আপনাকে সবটা শোধ করে দেব।“
একটুও সন্দেহ হয়নি প্রতারকের। টাকা দিয়ে দেন তিনি। এরপর ভূপেন্দ্র ফের ৫০০ টাকা চান। প্রতারক সেটাও পাঠিয়ে দেন। কিন্তু ভূপেন্দ্র আর টাকা পাঠায় না। ৯ মার্চ ফোন করলে তিনি বলেন, “জুয়েলার্সের দোকানে বলেছে, বাবা-মাকে নিয়ে আসতে হবে, তবেই টাকা দেবে। নাবালককে ওরা টাকা দিতে চাইছে না। আপনি আমার বাবা সেজে গয়নার দোকানে যাবেন?”
ভূপেন্দ্র এক বন্ধুকে সোনার দোকানের মালিক সাজিয়ে প্রতারকের সঙ্গে কথাও বলান। এসবের মধ্যে আরও ৪,৪৮০ টাকা চেয়ে বসেন ভূপেন্দ্র। প্রতারক সেই টাকাও পাঠিয়ে দেন। এভাবে মোট ১০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন ভূপেন্দ্র। এখন প্রতারকের ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা। ভূপেন্দ্রর থেকে এখন আর টাকা চান না তিনি। কিন্তু যে টাকা দিয়েছেন, সেটা ফেরত দেওয়ার জন্য কাকুতিমিনতি করেন।