কাজের জন্য শেখাবাটির অধিকাংশ যুবকই মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে গিয়েছেন। ফিরবেন সেই বৃদ্ধ হয়ে। হ্যাঁ, এটাই সত্যি। ১০ ফুট বাই ২০০ ফুটের একটা ঘরে থাকা। অনেক সময় তাও জোটে না। অকথ্য অত্যাচার, দুর্ব্যবহারও সহ্য করতে হয়।
আরও পড়ুন– ট্রেনের AC কোচে বসেছিল যুবক, GRP এসে তার ব্যাগের তল্লাশি চালায়, সেখানে যা মিলল…!
advertisement
শুধু তাই নয়। মৃত্যু হলে মরদেহ ফিরিয়ে আনতেও মাসের পর মাস লেগে যায়। এমন ঘটনা আগেও ঘটেছে। এবার ফের ঘটল। রাজস্থানের ঝুনঝুন জেলার বিশানপুরের এক ব্যক্তি ২০ বছর আগে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন। মাঝে একবারও দেশে ফেরেননি। এখন সেখানেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। মৃত ব্যক্তির পরিবার আর্থিকভাবে দুর্বল। মরদেহ সৌদি আরব থেকে ভারতে আনার অনেক খরচ। তাঁদের পক্ষে সেই ব্যয়ভার মেটানো সম্ভব নয়। তবে আপ্রাণ চেষ্টা করছেন তাঁরা। ঘরের ছেলেকে যেভাবে হোক ফিরিয়ে আনবেনই।
সবচেয়ে করুন বিষয় হল, মৃত ব্যক্তির স্ত্রী এখনও জানেন না, স্বামী আর বেঁচে নেই। ২০ বছর ধরে স্বামীর ফেরার অপেক্ষা করছেন। সন্তানদেরও বলেন, “কোনও চিন্তা নেই, বাবা একদিন ফিরবে।” বাড়ির লোকজন তাঁকে আর মুখ ফুটে মৃত্যুর খবর জানাতে পারেনি। শুধু বলেছে, স্বামী অসুস্থ, গুরুতর অসুস্থ।
মৃতের নাম রাজেন্দ্র নায়ক। ২৫ জানুয়ারি সৌদি আরবের একটি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। আপাতত মর্গে রয়েছে দেহ। গ্রামে মৃতদেহ ফেরাতে ৩ লাখ টাকার প্রয়োজন। কোথা থেকে জোগাড় হবে এত টাকা?
পরিবারের কাতর আবেদন, “কেউ কী আমাদের পাশে দাঁড়াবেন? অন্তত মৃতদেহটা যেন গ্রামে ফেরানো যায়।” ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে মৃতের পরিবার। রাজেন্দ্রকে একবার শেষ দেখা দেখতে চান তাঁরা।
গ্রামের প্রধান সুনীল বিজারণিয়া জানিয়েছেন, এলাকার জনপ্রতিনিধিদের সাহায্যে বিদেশ মন্ত্রকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। গ্রামের মানুষ একজোট হয়ে কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, যেভাবেই হোক মৃতদেহ গ্রামে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হোক।
রাজেন্দ্রর ভাই সঞ্চয় কুমার জানিয়েছেন, পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ। সেই জন্যই সৌদি আরবে কাজে গিয়েছিলেন রাজেন্দ্র। কিন্তু তাতেও অবস্থার খুব একটা পরিবর্তন হয়নি। রাজেন্দ্রর স্ত্রী এবং তিন সন্তান এখনও তাঁর মৃত্যুর খবর জানেন না। সবাই আশায় রয়েছেন, তিনি বাড়ি ফিরবেন।