ঠিক কী ঘটেছিল সেদিন। আসলে ঝাঁসি আসার জন্য বারাণসী-গোয়ালিয়র বুন্দেলখণ্ড এক্সপ্রেসে রিজার্ভেশন করেছিলেন বান্দার বাসিন্দা এক তরুণী। ওই ট্রেনের থার্ড এসি-তে ভ্রমণ করছিলেন তিনি। এই সময় টিকিট পরীক্ষা করতে পৌঁছয় রামলখন মীনা। মেয়েটিও নিজের টিকিট পরীক্ষা করান। এরপর সেখান থেকে চলে যায় টিটিই।
advertisement
এরপর ওই তরুণী নিজের অভিযোগে বলেন যে, ট্রেনটি যখন কুলপাহাড় পৌঁছয়, তখন ফের সেখানে উপস্থিত হয় টিটিই। এরপর তাঁর দিকে নোংরা ভাবে একদৃষ্টে চেয়েছিল সেই ব্যক্তি। মেয়েটিও অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে বসে পড়ে। কিন্তু মিনিট দশেক পরে টিটিই আবার সেখানে আসে। আবার মেয়েটির উদ্দেশ্যে অশ্লীল ইঙ্গিত করে সে। এবারেও মেয়েটি বিষয়টিকে পাত্তা দেননি। বরং নিজের মোবাইলে মনোনিবেশ করেন।
তরুণীর আরও অভিযোগ, ট্রেনটি যখন মৌরানিপুরে পৌঁছয়, তখন তাঁর মোবাইলে একটি অজ্ঞাতপরিচয় নম্বর থেকে একের পর এক হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ ঢুকতে শুরু করে। কিন্তু স্ক্রিনশট নেওয়ার আগেই মেসেজগুলি ডিলিটও করে দেওয়া হতে থাকে। এভাবে মেসেজ আসার পালা চলতেই থাকে। মেয়েটি মেসেজ সিন করার সঙ্গে সঙ্গে প্রেরক অবিলম্বে তা ডিলিট করে দিচ্ছিল। ঝাঁসি পৌঁছনো পর্যন্ত মেসেজ আসার পালা চলতেই থাকে।
তরুণীর কথায়, যে নম্বর থেকে মেসেজগুলি আসছিল, সেই নম্বরটিকে আইডেন্টিফাই অ্যাপে দিয়েছিলেন। তখনই দেখা যায় যে, ওই নম্বরটি টিটিই রামলখন মীনার। ট্রুকলারের ডিপি-তে ওই টিটিই-র ছবিই ভেসে ওঠে। এরপর ঝাঁসি রেলওয়ে ডিভিশনে সিনিয়র আধিকারিকদের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন তরুণী। তদন্তে নেমে দেখা যায়, তরুণীর অভিযোগ সত্য।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে যে, টিটিই রামলখন মীনা রিজার্ভেশন চার্ট থেকে মেয়েটির নম্বর জোগাড় করেছিল। আসলে তরুণী ফর্মে নিজের নম্বর দিয়েছিলেন রিজার্ভেশন করার সময়। আর সেই ফর্মই ছিল টিটিই-র হাতের মেশিনে। এরপর ওই নম্বর পেয়ে সারা রাত ধরে আপত্তিকর মেসেজ পাঠিয়ে গিয়েছিল অভিযুক্ত।
ওই ডিভিশনের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার আমন ভার্মা বলেন যে, টিটিই-র বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তরুণী। আর তদন্তে সেই অভিযোগ সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে। হাতে থাকা মেশিন থেকেই ওই নম্বর হাতিয়েছিল টিটিই। আপাতত ট্রেনের ডিউটি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তাকে। বর্তমানে পার্সেল অফিসে নিয়োগ করা হয়েছে। এমনকী তৈরি হয়েছে চার্জশিটও।