বেগম সমরুর আসল নাম ফরজানা, তিনি ছিলেন ১৮ শতকের একজন প্রভাবশালী নারী। তিনি ছিলেন একাধারে একজন নৃত্যশিল্পী, রাজনীতিবিদ এবং প্রশাসক। সাহস এবং বুদ্ধিমত্তার জন্য তিনি সুপরিচিত ছিলেন।
ভগীরথ প্যালেস ১৮ শতকের শেষের দিকে বেগম সমরুর প্রাসাদ হিসাবে নির্মিত হয়েছিল। এই প্রাসাদটি সেই সময়ে তার সৌন্দর্য এবং জাঁকজমকের জন্য বিখ্যাত ছিল। এখানে বেগম সমরু তাঁর দরবারের আয়োজন করতেন, যেখানে বিভিন্ন স্তরের মানুষ অংশ নিতেন। প্রাসাদটির স্থাপত্য এবং অভ্যন্তরটি ছিল সেই সময়ের সৃজনশীলতা এবং কারুকার্যের একটি চমৎকার উদাহরণ।
advertisement
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেগম সমরু কি হাভেলির রূপ ও ব্যবহার পরিবর্তিত হয়। ব্রিটিশ শাসনামলে, এই প্রাসাদটির নাম পরিবর্তন করে ভগীরথ প্যালেস রাখা হয় এবং এটি একটি প্রশাসনিক ভবন হিসাবে ব্যবহৃত হয়। ভারতের স্বাধীনতার পর, এই ভবনটি ধীরে ধীরে একটি বাণিজ্যিক কেন্দ্রে রূপান্তরিত হয়।
আজ ভগীরথ প্যালেস দিল্লির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যস্ততম বাজার। এটি এশিয়ার বৃহত্তম ইলেকট্রনিক বাজার হিসাবে বিবেচিত হয়, যেখানে সমস্ত ধরনের ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম এবং আনুষঙ্গিক সামগ্রী পাওয়া যায়। এখানে শতাধিক দোকান রয়েছে, যেখানে ছোট যন্ত্রপাতি থেকে শুরু করে বড় ইলেকট্রনিক গ্যাজেট সবই বিক্রি হয়।
ভগীরথ প্যালেসের বাজার সব সময়ই খদ্দেরে ভরপুর থাকে। এখানকার পরিবেশ খুবই প্রাণবন্ত এবং উত্তেজনাপূর্ণ। দোকানদাররা তাঁদের পণ্যের বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন। এখানে উপলব্ধ পণ্যের দামগুলিও প্রতিযোগিতামূলক, যা এই বাজারটিকে গ্রাহকদের জন্য আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।
ভগীরথ প্যালেসের ইতিহাস বলে যে, কীভাবে সব কিছু সময়ের সঙ্গে পরিবর্তিত হয় এবং নতুন পরিচয় অর্জন করে। বেগম সমরুর বিলাসবহুল প্রাসাদ থেকে এশিয়ার বৃহত্তম ইলেকট্রনিক মার্কেট পর্যন্ত এই যাত্রা শুধু দিল্লিরই নয়, দেশের বৈচিত্র্যময় ও সমৃদ্ধ ইতিহাসের প্রতীক। এই জায়গাটি এখনও মানুষকে আকর্ষণ করে এবং এর গল্প আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে আমাদের চারপাশের জিনিসগুলি নিজেদের মধ্যে একটি ঐতিহাসিক পরিচয় ধারণ করে।