প্রথমে প্রবল বন্যা, আর তারপর অন্তহীন খরা—পুরো হিমালয়ের প্রভাব বলয়ে থাকা মানুষের জীবনে এটিই ভবিতব্য হতে যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক নতুন একটি গবেষণা প্রতিবেদনে সম্প্রতি এই হুঁশিয়ারি জানানো হয়েছে। কাঠমান্ডুতে এই গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। ২১০ জন বিজ্ঞানী কাজ করেন এটি তৈরিতে। এই গবেষণা প্রতিবেদন তৈরিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ইন্টিগ্রেটেড মাউন্টেন ডেভেলপমেন্টের (আইসিআইএমওডি) গবেষক ফিলিপাস ওয়েস্টার।
advertisement
আরও পড়ুন – টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখাতে গিয়ে নিখোঁজ আস্ত সাবমেরিন! জোর তল্লাশি আটলান্টিকে
এই অঞ্চলের আটটি দেশের ২৫ কোটি মানুষের জীবন সরাসরি এর ওপর নির্ভরশীল। এই অঞ্চলে রয়েছে পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট ও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ কেটু (কে২)। পৃথিবীর তৃতীয় মেরু নামে পরিচিত এই দুই পর্বতশৃঙ্গেই উত্তর ও দক্ষিণ মেরু ব্যতীত পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বরফ জমা রয়েছে। আগামী কয়েক দশকের মধ্যেই এই বরফ গলা আরও বাড়তে পারে।
কারণ, ক্রমবর্ধমান বায়ুদূষণ ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বাড়ছে বৈ কমছে না। এই অঞ্চলের বায়ু দূষিত হচ্ছে মূলত ইন্দো-গাঙ্গেয় সমতল এলাকা থেকে বাতাসে জমা হওয়া কার্বনে। বিশ্বের সবচেয়ে বায়ুদূষিত অঞ্চলের অন্যতম শীর্ষে রয়েছে ওই এলাকা। হিমালয়ের হিমবাহগুলো এখন ৬৫ শতাংশ বেশি দ্রুত গলছে। এর জেরে বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।
হিমালয়ের হিমবাহগুলো ২০১১ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সময়ে আগের দশকের তুলনায় ৬৫ শতাংশ বেশি হারে হারিয়ে গেছে। গঙ্গা, সিন্ধু, মেকং, হোয়াংহো (ইয়েলো), ইরাবতীসহ বিশ্বের বড় বড় ও গুরুত্বপূর্ণ ১০টি নদীর জলের উৎস হিমালয়ের হিমবাহগুলো। তাই একসঙ্গে কাজ করতে না পারলে দক্ষিণ এশিয়ার এই কটা দেশের ভাগ্যে চরম বিপদ দাঁড়িয়ে আছে।