আসলে নিজের জীবন নিয়ে আশা হারিয়ে ফেলেছিলেন ওই মহিলা। ফলে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছিলেন তিনি। ফলে রেললাইনে পৌঁছেও গিয়েছিলেন আত্মহত্যার জন্য। কিন্তু আচমকাই তাঁর জীবনে আসে এক অদ্ভুত মোড়। মহিলাকে আত্মহত্যার হাত থেকে বাঁচান খোদ ট্রেনচালকই। এখানেই শেষ নয়, ওই মহিলা নিজের জীবনরক্ষাকারীর প্রেমে পড়ে যান। তারপরে একেবারে ছাদনাতলায় এক হয় চার হাত।
advertisement
ডেইলি স্টার নিউজ ওয়েবসাইটের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৩৩ বছর বয়সী শার্লট লি আদতে ইংল্যান্ডের ওয়েস্ট ইয়র্কশায়ারের ব্র্যাডফোর্ডের বাসিন্দা। পেশায় তিনি একজন নার্স। কিন্তু দুই সন্তানের জননী শার্লট মানসিক অবসাদে ভুগতেন। ২০১৯ সালে তিনি নিজের জীবন শেষ করার সিদ্ধান্ত নেন। আর যেমন ভাবা, তেমন কাজ। আত্মহননের জন্য সটান রেললাইনে পৌঁছে গিয়েছিলেন শার্লট। ট্রেন আসার জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। আসলে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করার কথা ভেবেছিলেন তিনি। এদিকে ধেয়ে আসছিল ট্রেনটি। দূর থেকে ওই মহিলাকে লক্ষ্য করেন ট্রেনচালক।
এরপর রীতিমতো তৎপর হয়ে একটু আগেই ট্রেন থামিয়ে দেন ওই চালক। নেমে আসেন ট্রেন থেকে। এরপর এগিয়ে যান শার্লটের দিকে। প্রায় আধ ঘণ্টা কথা হয় তাঁদের মধ্যে। শার্লটকে জীবনের গুরুত্ব বোঝান। ট্রেনচালকের কথা শুনে যেন নতুন করে বাঁচার ইচ্ছা খুঁজে পান শার্লটও। এরপর ট্রেনচালক তাঁকে নিকটবর্তী স্টেশনে পাঠিয়ে দেন। আবার সেখান থেকে স্টেশন মাস্টার এবং পুলিশ শার্লটকে পাঠান মেন্টাল হেলথ সার্ভিসে। এদিকে ওই ট্রেনচালককে মনে ধরে শার্লটের। ফলে ফেসবুকে সার্চ করতেও শুরু করে দেন। অনেক বাধাবিপত্তি পেরিয়ে খুঁজে পান ট্রেনচালককে। যাঁর নাম ডেভ লি। মেসেজে ডেভকে ধন্যবাদ জানান শার্লট। অন্যদিকে ডেভও জানান যে, যখনই কথা বলার প্রয়োজন হবে, তখনই যেন তাঁকে কল করে নেন শার্লট। সব সময়ই তাঁকে পাবেন শার্লট। মাস দুয়েক এভাবে কথা চালাচালির পরে কফি খাওয়ার জন্য সাক্ষাৎ করার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।
ধীরে ধীরে একে অপরের প্রেম পড়ে যান শার্লট আর ডেভ। এর তিন বছর পরে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তাঁরা। বিয়ের সময় ২২ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন শার্লট। আপাতত তিন সন্তানের জননী তিনি। আর ডেভকেও ভালবাসেন খুবই। শার্লট আসলে বুঝেছেন, জীবনটা সুন্দর। তাই সেটা এভাবে হেলায় হারানো উচিত নয়।