বাড়িতে তাঁত। সেই তাঁতে কাপড় বুনে বিক্রি করে কোনও রকমে টেনেটুনে সংসার চলে। তারমধ্যেই বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত কালীপুজো রয়েছে। পাঁচকড়ি মণ্ডলের স্ত্রী সন্তান কামনায় কাতর মিনতি করলেন সেই দেবীর কাছে। মা কালী স্বপ্নাদেশ দিলেন, ছেলেপুলে নিয়েই আসব। ছেলেপুলে নিয়ে আসা মানে তো মা দুর্গার রূপে আসা! তবে যে মা দুর্গার পুজোর আয়োজন করতে হবে। সে কথা না হয় থাক মিথ হয়েই।
advertisement
আরও পড়ুনঃ জমিদারি কেনার পরই পুজো শুরু, জানুন আউশগ্রামের চট্টোপাধ্যায় পরিবারের ইতিহাস
আরও পড়ুনঃ ৪৫০ বছরের গৌরবের ইতিহাস, জেলার প্রাচীন পুজোর মধ্যে অন্যতম 'বড় বাড়ির পুজো'
স্ত্রীর কথায় কালীর বদলে দুর্গাপুজোর আয়োজন শুরু করলেন তাঁতী পাঁচকড়ি মণ্ডল। কিন্তু তার যে খরচ অনেক। এতো খরচ জোগাবেন কোথা থেকে! চিন্তায় পড়লেন পাঁচকড়ি। ভেবে চিন্তে উপায় একটা বের হল। শুরু হল বাড়ি বাড়ি ভিক্ষে করা। ভিক্ষের চাল জমা হল ঠাকুর ঘরে। সেই ভিক্ষের কড়ি একত্রিত করে কালীর মন্দিরে প্রতিষ্ঠা হল দুর্গার। আধুনিক মনন বলবে কাকতালীয়, তবে মণ্ডল পরিবারকে তারপর থেকে আর বংশরক্ষার জন্য চিন্তা করতে হয়নি। বর্তমানে পরিবারে তুলনামূলক স্বচ্ছলতা এসেছে। তবে ভিক্ষের প্রথা ফিরে এসেছে বারে বারে। অনেকেই মনোবাঞ্ছা পূরণে ভিক্ষের মানত করে। নিয়ম রক্ষার ভিক্ষে করে তা পূরণও করেন। সে ভাবেই চলে আসছে পুজো।
মহাষষ্ঠীতে পালকি করে কলাবউ আনা হয়। সেই কলাবউ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে পুজোর সূচনা হয়। বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দিরের নির্ঘন্ট মেনে চলে পুজো। পুজোর চার দিন আত্মীয়স্বজনরা উপস্থিত হন। চারদিন ধরে চলে পঙতিভোজ। আনন্দ উল্লাসে জমজমাট থাকে কাঞ্চননগরের মণ্ডলবাড়ি।
Saradindu Ghosh