এই সকালের সাজটাও তাই একটু বিশেষ রকমের হওয়া দরকার।
মেয়েদের পোশাক—
অষ্টমীর সকালে অঞ্জলি দিতে যাওয়ার সময় শাড়ি পরা যেন অলিখিত নিয়ম। ছোট থেকে বড় সকলেই পুজোর শাড়িখানা বেছে রাখে এই সকালের জন্য।
কেমন হবে শাড়ি? তা কি আর বলে দেওয়া যায়! এই দিনটা নিজের মতো করে সাজার। চাইলে তাঁতের শাড়ি পরা যেতে পারে। অথবা সিল্ক। বা ব্লেন্ডেড কোনও শাড়ি। তবে এই দিনের শাড়িতে চওড়া বা মাঝারি পাড় থাকলে অবশ্যই চেহারায় একটা আভিজাত্য আসে। তাঁত হোক, বা সিল্ক, তসর বা গরদ অথবা একেবারে প্রিন্টেড কোনও শাড়ি, পরার উপর নির্ভর করে সৌন্দর্য। তাই মনের মতো যে কোনও শাড়ি বেছে নিলেই অষ্টমীর সকাল জমজমাট।
advertisement
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পালনে মরিয়া 'সুজিতবাবু', শ্রীভূমির রাস্তায় নেই যানজট!
সঙ্গের ব্লাউজে একটু বিশেষত্ব থাকতে পারে। টিন এজার থেকে তরুণীরা অনায়াসে প্রথাগত ব্লাউজের বদলে বেছে নিতে পারে ক্রপ টপ। চেহারায় আভিজাত্য আনতে চাইলে হাতায় পাড় লাগানো ব্লাউজ বেছে নেওয়া যায়। স্লিভলেস ব্লাউজেও বেশ সুন্দর দেখাতে পারে অষ্টমীর সকালটা।
আরও পড়ুন: পেশাদাররা হতে পারেন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, UGC-র নতুন নির্দেশ
মেক-আপ—
অষ্টমীর সকালে মেক-আপ হোক স্নিগ্ধ। চোখের পাতার উপর হালকা গোলাপি বা কমলা রঙের আভা ছড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে। কাজলের রেখা থাক মানানসই। ঠোঁটের রঙে রাখা যেতেই পারে রক্তাভা। দিনের আলোয় চোয়ালে চড়া মেক-আপ ভাল লাগে না, তাই অঞ্জলির সময় বাদ পড়ুক ব্লাশ, ব্রোঞ্জার, কনট্যুরিং। মুখের গড়ন অনুযায়ী একটা টিপ কিন্তু খুব জরুরি।
আলাদা হওয়ার চাবিকাঠি—
অষ্টমীর দিনের জন্য এই চাবিকাঠি হোক টিকলি। ভিড়ের মধ্যেও নিজেকে একটু আলাদা করে নিতে চাইলে বেছে নেওয়া যেতে পারে টিকলি। মণ্ডপে অঞ্জলি দিতে যাওয়ার সময় শাড়ির সঙ্গে অন্য সব গয়না একটু হালকা করে দিতে হবে। চুলটা বেঁধে নিতে হবে পরিপাটি করে, খোলা রাখতে চাইলেও তা ভাল করে আঁচড়ে নেওয়া দরকার। প্রয়োজন হলে সামান্য অ্যালোভেরা জেল লাগিয়ে নেওয়া যেতে পারে। এতে চুলের ক্ষতিও হবে না, আবার চেহারায় একটা স্নিগ্ধ ভাবও আসবে। এরপর পছন্দ মতো একটা টিকলি ঝুলিয়ে নেওয়া যেতে পারে সিঁথিতে। খুব বড় টিকলি, খুব ঝুলিয়ে না পরাই ভাল।
যদি পছন্দ মতো টিকলি হাতের কাছে না থাকে তবে কোনও পেনডেন্ট বা কানের দুলকেও কায়দা করে ঝুলিয়ে নেওয়াই যায় সিঁথিতে। সে ক্ষেত্রে একটা কালো উল বা কালো কার প্রয়োজন হবে। আর চুলটাও বাঁধতে হবে উল্টে যাতে কপালে দেখা যায় শুধু পেনডেন্টটাই।
ছেলেদের সাজ—
বাঙালি ছেলের পাঞ্জাবি পরার এই তো দিন। তবে জিনস বা পাজামা নয়। এ দিন সকালে বেছে নেওয়া যাক ধুতি। সেলাই করা ধুতি তো পাওয়াই যায়। একটু কষ্ট করলে কাছা, কোচা-সহ ধুতি পরে ফেলাও খুব অসম্ভব নয়। দেখতে অসম্ভব অভিজাত লাগে এতে।
আজকাল ছেলেদের মধ্যেও শাড়ি পরার রেওয়াজ তৈরি হচ্ছে। একেবারে মা-কাকিমার মতো শাড়ি না পরলেও ধুতি হিসেবে শাড়ি পরা যায় অনায়াসে। এ বার পুজোয় ম্যাচিং করে একটা শাড়ি পরে দেখা যেতেই পারে।
তবে সমস্যা একটাই, উচ্চতা খুব বেশি হলে শাড়িকে ধুতি হিসেবে পরা যাবে না। কারণ শাড়ির বহর কম হয় সাধারণত। সে ক্ষেত্রে আগে থেকে প্রস্তুতি থাকলে একটা মানানসই পাড় কোমরের কাছে লাগিয়ে নিলে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
আলাদা হওয়ার চাবিকাঠি—
অঞ্জলি দিতে যাওয়ার সময় ধুতি পাঞ্জাবির সঙ্গে একটা চাদর নেওয়াই যায় কাঁধের উপর। সে ক্ষেত্রে ধুতি পাঞ্জাবি খুব সাধারণ হলেও সাজের কদর বেড়ে যাবে কয়েকগুণ। তবে উত্তরীয় ব্যবহার করার সময় তা গলায় পেঁচিয়ে নেওয়া যাবে না। ওটা এই মুহূর্তে আউট অফ ফ্যাশন। ভাঁজ করে কাঁধে ফেলে রাখতে হবে।
চাইলে গলায় পরা যেতেই পারে একছড়া মুক্তোর মালা। সে মালা খুব লম্বা হলে কাঁধ থেকে আড়াআড়ি করে পৈতের মতোও রাখা যেতে পারে পাঞ্জাবির উপর।
তবে আর কী! ব্যক্তিত্বের দ্যুতিতে ঝলসে যাক পুজো মণ্ডপ।
বিশেষ বিষয়—
করোনার দাপট কমলেও ভাইরাস এখনও বিদায় নেয়নি। তাই অতিরিক্ত ভিড়ে যাওয়ার সময় মাস্কে নাক-মুখ ঢাকতে ভুলে গেলে চলবে না। প্রয়োজনে পোশাকের সঙ্গে মানানসই মাস্ক নিয়ে বেরোতে হবে।