বিহারের দ্বারভাঙ্গা জেলার কেওটি ব্লকের খিরমা গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ ইফতিখার। ২০০১ সালে বেরিয়েছিলেন কাজের খোঁজে। অথচ তিনি আর ফেরেননি। এই দীর্ঘ সময় কেটে যাওয়ায় কালের নিয়মে বয়স বেড়েছে ইফতিখারের বাবা মহম্মদ শওকত এবং মা শাহজাদী খাতুনের। তাঁদের পরিবার অত্যন্ত দরিদ্র। এখনও অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন মহম্মদ শওকত। বৃদ্ধ বয়সে নিজের এবং পরিবারের ভরণপোষণের জন্য বাড়িতেই একটি ছোট্ট দোকান চালাচ্ছেন তিনি। কিন্তু আচমকাই তাঁদের বাড়িতে যোগীর ছদ্মবেশে পৌঁছয় দুই যুবক। নিজেকে নিখোঁজ মোহাম্মদ ইফতিখার পরিচয় দেন একজন।
advertisement
আর ইফতিখারের আগমনের কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই পরিবার তো বটেই, গোটা গ্রামে আনন্দের ঢেউ বয়ে যায়। পরিবারের সদস্যরাও তাকে স্বাগত জানাতে মেতে ওঠেন। এমনকী ইফতিখারকে দেখতে ভিড়ও জমে যায়। আর ওই যোগীও একের পর এক পুরনো কথা বলে পরিবারকে বিশ্বাস করানোর চেষ্টা করেন। অবশেষে সকলে যোগীরূপী যুবককে ইফতিখার হিসাবে মেনে নেন।
এরপর শুরু হয় যোগীর আসল খেলা। পরিবারের সঙ্গে থাকার জন্য পরিবারের কাছ থেকে আড়াই থেকে তিন লক্ষ টাকা দাবি করে বসেন। সকলকে বলেছিলেন যে, মুক্তি পাওয়ার জন্য ওই টাকা গুরুকে দিতে হবে এবং তা দিয়ে পূজা পাঠ করতে হবে।
আরও পড়ুন- রাজ্য জুড়ে আংশিক মেঘলা আকাশ, সপ্তাহান্তে বৃষ্টির পূর্বাভাস কোন কোন জেলায়? জেনে নিন
হতদরিদ্র পরিবারটিকে এত পরিমাণ টাকা দেওয়ার জন্য তিন দিনের সময় দেওয়া হয়। এরপর যোগী চলে যান। আবার পরের দিন ফের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান, একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া করেন। বাড়ির মহিলাদেরকে বিশ্বাস করানোর চেষ্টা করেন। গালগল্প করেন। মহিলাদের থেকে মোবাইল ফোন এবং টাকাও নেন। তারপর তৃতীয় দিন নাগাদ যোগী বিপদ বোঝেন। ফলে আর বাড়ি ফেরেননি। এবার ফোন করেন এবং বলেন যে, গুগল পে-তে ২০০০ টাকা দিলেই হবে।
এবার ইফতিখারের মা-বাবার মনে সন্দেহ দানা বাঁধে। তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা হচ্ছে বলে মনে হয়। গ্রামের লোকজনও তাঁদের জানান যে, যোগী একটি মিথ্যা গল্প বানিয়েছিলেন। জানা যায়, প্রতারকরা পাশের গ্রাম থেকে ইফতিখারের নিখোঁজ হওয়ার কথা শুনেছিলেন।