‘চা ওয়ালা বাবা’ (চা ওয়ালে বাবা), সর্বদা গেরুয়া পোশাকে থাকেন। লম্বা দাড়ি এবং চুল। আইএএস-র কোচিংয়ে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। সবাইকে সমান সুযোগ দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছেন বছরের পর বছর ধরে। যাদের অর্থের সংস্থান নেই, তাদের জীবন গড়ে দেওয়াই একমাত্র লক্ষ।
আরও পড়ুনঃ ঝোপের এই কাঁটাগাছ ‘সোনা’র চেয়েও দামি! হাজার রোগের যম! খুঁজে এনে আজই খাওয়া শুরু করুন
advertisement
কোনও কথা না বলেই শিক্ষা দেন এই ‘চা ওয়ালে বাবা’। সবাই মনে করে কোচিং দিতে হলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ক্লাস নিতে হবে। কিন্তু এই বাবা এমন নন, তিনি মুখে কথা বলেন না। তিনি সর্বদা ঈশ্বরকে মাথা রাখেন, নীরবতা পালন করে। শিক্ষার্থীদের শুধুমাত্র অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে গাইড করেন। হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে নোট দেওয়া হয়। অন্যথায় হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমেও কথা আদানপ্রদান হয়। হাজার হাজার মানুষ তাঁকে মেন্টর বলে মনে করেন। সন্দেহ যাই হোক না কেন, হোয়াটসঅ্যাপই তার জন্য যথেষ্ট। উত্তর মিলবে সঙ্গে সঙ্গেই।
আরও পড়ুনঃ কাঞ্চনজঙ্ঘা একেবারে নাগালে! উত্তরবঙ্গের এই জায়গা আকর্ষণের কেন্দ্রে, এ যেন সাক্ষাৎ স্বর্গ
এই বাবার আরেকটি বিশেষত্ব ‘চা’। তিনি কোনও শক্ত খাবার একেবারেই খান না। দিনে মাত্র ১০ কাপ চা পান করেন। এ জন্যই সবাই তাঁকে ‘চা ওয়ালে বাবা’ বলে ডাকে। তিনি গত ৪০ বছর ধরে একই জীবনধারা অনুসরণ করছেন। সাধুর এক ভক্ত বলেন, ‘গত ৫-৬ বছর ধরে বাবার সঙ্গে ঘুরছি। আমরা সবাই তাঁর শিষ্য। যখনই আমাদের কোনও সাহায্যের প্রয়োজন হয়, তিনি আমাদের নির্দেশনা দেন। তিনি সর্বদা নীরব থাকেন এবং অঙ্গভঙ্গি এবং হোয়াটসঅ্যাপের বার্তার মাধ্যমে আমাদের গাইড করেন। যদি কোনও সমস্যা হয়, তাঁকে সেই কথা জানালেই তাঁর থেকে সাহায্য মেলে।
‘চা ওয়ালে বাবা’ বিএসসি গ্র্যাজুয়েট। তিনি গত ৪০ বছর ধরে বিনামূল্যে সিভিল সার্ভিস কোচিং দিচ্ছেন। বাবা প্রকাশ করেছিলেন, তাঁর লক্ষ্য শিক্ষার্থীদের শিক্ষিত করা। আর নীরবতার কারণ শক্তি সঞ্চয় করা। এতে নাকি সমাজ ভাল কিছু করার সুযোগ পাবে। সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা বিশ্বের অন্যতম কঠিন পরীক্ষা। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষ এই পরীক্ষায় বসেন। তিনি তাঁর সমস্ত শক্তি একত্রিত করে পড়ুয়াদের শিক্ষা দেন কিন্তু সাফল্য আসে হয় খুব কম পড়ুয়ার জীবনে।
কিছু শিক্ষার্থী নিজেরাই প্রস্তুতি নেয়, অন্যরা কোচিং গ্রহণ করে। তবে অনেক পরীক্ষার্থী বলছেন, এমন কঠিন পরীক্ষায় মেন্টরশিপের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, সেখানেই বাজিমাত করেন এই বাবা। কেউ কেউ নিজের প্রস্তুতি নিয়ে এই পরীক্ষায় পাশ করলেও বেশিভাগই উত্তীর্ণ হতে পারেন না। এমন উচ্চমানের চাকরির জন্য প্রয়োজনীয় কোচিং, যা বিনা পয়সায় দেওয়া অস্বাভাবিক। কোনও খাবার না খেয়ে বা কোনও কথা না বলে প্রার্থীদের গাইড করা ‘চা ওয়ালে বাবা’ তাই স্যালুট পাওয়ার যোগ্য বলে দাবি তাঁর ছাত্র-ছাত্রীদের।