রয়্যাল সোসাইটি অফ পাবলিশিং-এ প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণা। নাম দেওয়া হয়েছে ডিম-লাইট কালার ভিশন ইন দ্য ফ্যাকাল্টেটিভলি নকটার্নাল এশিয়ান জায়ান্ট হানি বি, এপিস ডরসাটা। সেখানেই কিছু নতুন গবেষণা তুলে ধরা হয়েছে।
আগে জানা গিয়েছিল যে, নির্দিষ্ট কিছু মথ এবং কার্পেন্টার বি নামে এক ধরনের মৌমাছি স্বল্পালোকে রঙ দেখতে পায়। এমনকী এ-ও জানা গিয়েছে, অন্ধকারে দেখার এক বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে ওই মৌমাছিদের। কীভাবে এই পতঙ্গ রাতের বেলায় রঙ দেখতে পায়, তার উত্তর লুকিয়ে রয়েছে তাদের চোখেই। এমনকী রাতে তারা কীভাবে ফুলের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে, সেটাও জানা যেতে পারে। যেটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ গাছের পরাগ সংযোগের জন্য মৌমাছিরা একটা বড় ভূমিকা পালন করে। এমনকী রাতেও এটা হতে পারে।
advertisement
দিনের বেলায় মানুষ রঙ দেখতে পায়, আবার রাতের বেলায় তারা শুধু ধূসরের শেড দেখতে পায়। মৌমাছিদের ক্ষেত্রেও বিষয়টা এরকমই। রাতে ফুলের কাছে গেলে তারাও একই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে। তবে এই বাধা পেরোনোর ক্ষেত্রে কিছু পোকামাকড়ের একটি অনন্য উপায় রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে, নির্দিষ্ট কিছু মথ রয়েছে, যাদের চোখ আলো দিতে পারে। ফলে অন্ধকারেও তারা সহজে দেখতে পায়। যদিও কার্পেন্টার বি-এর চোখ কিন্তু স্বল্প আলোয় দেখার মতো নয়। তবুও এই ধরনের মৌমাছিরা রাতেও রঙ দেখতে পায়। যা বেশ উল্লেখযোগ্য।
আরও পড়ুন-দুর্ঘটনা নাকি খুন? ফাঁস হয়ে গেল শ্রীদেবীর মৃত্যুর আসল কারণ! ভয়ঙ্কর সত্য সামনে আনলেন বনি কাপুর
এশিয়ান জায়ান্ট হানি বি (এপিস ডরসাটা)-এর মতো কয়েক ধরনের মৌমাছি কম আলোতেও রঙ দেখতে পায়। আগে ধারণা ছিল যে, বিভিন্ন পোকামাকড়ের ফুল অনুভব করার ক্ষমতা থাকে। মূলত ফুলের গন্ধের মাধ্যমেই এটা করা হয়। সেই ধারণাটাকেই একপাশে সরিয়ে রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন- অগ্নিসাক্ষী করে গোপনে কি বিয়ে সারলেন উরফি? কে এই ‘মিস্ট্রি ম্যান’? ছবি ভাইরাল হতেই তোলপাড়!
এই গবেষণাপত্র যাঁরা লিখেছেন, তাঁরা এই বিষয়ে কয়েকটি পরীক্ষা-নিরীক্ষাও চালিয়েছেন। তাতে দেখা গিয়েছে যে, রঙের আপেক্ষিক ঔজ্জ্বল্য মৌমাছিদের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য সঙ্কেত নয়। বিশেষ করে স্বল্পালোকের পরিস্থিতিতে আলোর দ্রুত পরিবর্তন ঘটে। এর অর্থ হল, একটি রঙ কতটা উজ্জ্বল, সেটাই কেবল তারা পরীক্ষা করে না। এই চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও এই মৌমাছিরা স্বল্পালোকেও নির্দিষ্ট কিছু রঙ বুঝতে পারে।
এই আবিষ্কার থেকে বোঝা যায় যে, এশিয়ান জায়ান্ট হানি বি হল দ্বিতীয় পতঙ্গ, যাদের চোখ স্বল্প আলোতেও দেখার ক্ষমতা রাখে। আর এই নিরিখে প্রথম পতঙ্গটি হল কার্পেন্টার বি। আর আশ্চর্যজনক ভাবে, এশিয়ান জায়ান্ট হানি বি-র স্বল্পালোকে রঙ দেখার ক্ষমতা অনেকটা মানুষের মতোই। কিন্তু এটা কেন গুরুত্বপূর্ণ? আসলে মৌমাছিরা পরাগ সংযোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর ফলেই ফল এবং বীজ তৈরি হয়। ফুলে ফুলে ঘুরে তারা নেক্টর এবং পরাগ আহরণ করে। বিভিন্ন ফুলে তারা পরাগ সংযোগ করে। আর এটা গাছেদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই কারণেই রাতে রঙ এবং ফুলের সঙ্গে মৌমাছির যোগাযোগ স্থাপনের বিষয়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।