শরতের আকাশ আজ ভাল নেই। মন খারাপ উৎসবের। তবু এবারও উমা ঘরে আসবে। কিন্তু ঘরের উমার বিসর্জন হয়ে গেছে। সে ফাঁকি দিয়ে পালিয়েছে। পরে আছে ঘর দুয়ার আর কালি কলম। আর কিছু খাতা। মাটির উমা এবার তাই বড্ড নিয়মমাফিক।
নিয়োগীরা ছিলেন বাংলাদেশের পাটগ্রামের জমিদার.....সেখানেই পুজো শুরু ১৮০৮ সালে.....পরে জলপাইগুড়ি চলে আসেন নিয়োগীরা.....বাসা বদলায় উমারও....চা ব্যবসায় হাত পাকে....পুজো বাড়ে বহরে, আড়ম্বরে.....তবে পুজোর চেয়ে পুজোর পত্রিকায় অনেক বেশি উৎসাহ পরিবারের সদস্যদের।
advertisement
এক সময়ে নাকি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় লিখতেন এই পত্রিকায়। পত্রিকার তদারকির দায়িত্বে ছিলেন পরিবারের বড় বউ। বাণী নিয়োগী.....পত্রিকার প্রচ্ছদ কী হবে.....কোন লেখাটা কোন পাতায় ছাপবে...সব ছিল তাঁর নখদর্পণে। নিজেও লিখতেন নিয়ম করে.....পত্রিকা প্রকাশ করতে কৌটো করে টাকা তুলতেন....সকলকে তাড়া দিয়ে লেখা আদায় করতেন......এক কথায় তিনিই ছিলেন দশভূজা.....
বয়স থাবা বসিয়েছিল শরীরে...ছাড় দিয়েছিল মনকে .....ছাড় মিলেছিল কলমেরও....অবশেষে ছন্দপতন চুরানব্বইয়ে...গত বছর পুজোর কিছু পরে.....যদিও এবছরের পুজো সংখ্যার লেখাটা লিখে রেখে গিয়েছিলেন বাণী নিয়োগী.....সেই লেখা দিয়েই এবার স্মৃতিতর্পণ। নিয়োগী পরিবারের....কলম ধরেছেন পরিবারের অন্য সদস্যরাও..... স্মৃতিচারণে।
ষষ্ঠীতে এবারও উমা আসবে বাড়িতে....প্রতিবারের মতই এবারও সেদিনই প্রকাশিত হবে পারিবারিক পুজো সংখ্যা ‘জ্যোতি’। বাণী থাকবেন তাঁর শেষ লেখা হিসেবে। নীরব উপস্থিতি হয়ে। বাণী নিয়োগীর স্মৃতি তর্পণ করেই এবার দুর্গার বোধন নিয়োগী পরিবারে।