NBSTC এর তরফ থেকে জানানো হয়েছে সেপ্টেম্বর মাস থেকে নতুন রূপে সপ্তাহে দুদিন করে চলবে এই বাস পরিষেবা। কোচবিহার থেকে পুন্ডিবাড়ি ও তুফানগঞ্জ রুটে কিছু বছর আগেও চলতো এই বাস, কিন্তু বিভিন্ন কারণে বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু কোচবিহার তথা উত্তরবঙ্গের মানুষের আবেগ ও শহরের ঐতিহ্য কে মাথায় রেখে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে এই পরিষেবা। পর্যটকদের জন্য হয়ে উঠতে চলেছে আকর্ষণের এক নয়া কেন্দ্রবিন্দু।নিগম সূত্রেই জানা গিয়েছে, কোচবিহার থেকে পুন্ডিবাড়ি, সোনাপুর, তুফানগঞ্জ ও বক্সিরহাট রুটে মূলত দোতলা বাস চালান হত। ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে দোতলা বাস চলত। চওড়া ও মোটামুটি সোজা রাস্তায় চলাচলের সুবিধার কথা মাথায় রেখেই ওই রুট ঠিক করা হয়েছিল।
advertisement
সাধারণ বাস যেখানে এক লিটার ডিজেলে প্রায় ৪ কিমি দূরত্ব যায়, সেখানে ওই দোতলা বাস যায় বড়জোর ২ কিমি। ফলে জ্বালানি একটা মস্ত বড় ফ্যাক্টর হয়ে ওঠে। নিগম সূত্রেই জানা গিয়েছে, রাজাদের আমলের ঐতিহ্যের কথা মাথায় রেখে নিগম কর্তারা আগেও পুরানো দোতলা বাস দুটি মেরামত করে নতুন চেহারায় রাস্তায় নামানোর চেষ্টা করেছিলেন। কলকাতার একটি সংস্থার বিশেষজ্ঞদের এনে কোচবিহারে ওই বাস দুটি দেখানোও হয়েছিল। কিন্তু প্রায় আড়াই দশকের পুরানো লড়ঝড়ে ওই বাস দুটি মেরামত করার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ মেলেনি। তাছাড়া অন্য বাসের তুলনায় পুরোনো দোতলা বাসে প্রায় দ্বিগুণ তেল খরচের সমস্যাও রয়েছে। এই অসুবিধা গুলি সামনে আসার পরেই ঐতিহ্য রক্ষার তাগিদে নতুন দোতলা বাস কেনার পরিকল্পনা হয়। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর ওই নতুন দোতলা বাস কেনার জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক বরাদ্দ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু নতুন দোতলা বাস অবশ্য কোচবিহারের রাস্তায় নামেনি।
উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, সত্তরের দশকে এই শহরে বিভিন্ন রুটে চারটি দোতলা বাস চালান হত। এর মধ্যে দু’টি কয়েক বছর আগে পুরোপুরি অকেজো হয়ে পড়ে। ঐতিহ্য রাখতে বাকি দুটি বাস পালা করে উৎসবের মরসুম ও পর্যটন প্যাকেজে রাস্তায় নামানো হত। সেই বাস দুটি নিয়েই শুরু হবে ডাবল ডেকার সফর। NBSTC এর চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পরেই পার্থ প্রতিম রায় আধিকারিকদের সাথে এই বিষয়ে বৈঠক করেন। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়েছে এই বাস চালানোর বিষয়ে। উনি জানিয়েছেন, "উত্তরবঙ্গে বহু মানুষ আসেন।পর্যটকদের জন্যেই আমরা এই পরিষেবা শুরু করব। ধাপে ধাপে চাহিদা বাড়লে বাস বাড়বে। কোচবিহার সহ পাশ্ববর্তী জায়গায় যে সব দর্শনীয় স্থান আছে সেগুলিকে ঘুরিয়ে দেখানোর ব্যবস্থা করা হবে এই বাস দিয়ে।" প্রসঙ্গত, কলকাতাতেও নিয়ে আসা হয়েছে দুটি আধুনিক মানের দোতলা বাস।