মমতা বলেন, ‘‘এয়ারপোর্টে আমার কথার ভুল ব্যাখ্যা হয়েছে। আমার সঙ্গে এমন রাজনীতি করবেন না। আমি মিট করি। অন্যরা করে না। জেলাশাসক ও জেলা পুলিশ সুপার বাকিরা রিপোর্ট তৈরি করেছেন। জনপ্রতিনিধিরাও করেছেন। জল আসার আগেই ইভাক্যুয়েট করা হয়েছে। তাই মানুষ রক্ষা পেয়েছে। সব আলু আমরা কিনে নিয়েছি। শস্যবীমা পাবেন। যারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছেন তাদের আটজনকে আমি পুরষ্কৃত করেছি। আমি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যাচ্ছি।’’
advertisement
মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, ‘‘আজ আমি আলিপুরদুয়ারের হাসিমারায় যাচ্ছি। সেখানে আমার একটি প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠক রয়েছে। আমি সবাইকে ডেকে আলিপুরদুয়ার জেলার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করব। এরপর আমি হাসিমারাতেই রাতে থাকব, কারণ পাহাড়ি পথে রাতে চলাচল করা সম্ভব নয়। আগামীকাল নাগরাকাটা ও আশপাশের আরও কিছু জায়গা পরিদর্শন করব। কাজ শেষ হতে সন্ধ্যা হয়ে যাবে, তারপর আমি উত্তরকন্যায় ফিরে আসব।’’
মমতা আরও জানালেন, ‘‘পরের দিন আমি মিরিক যাব, যেখানে দুর্যোগের ঘটনা ঘটেছে। সেখানে থাকার ব্যবস্থা না থাকায়, আমি দার্জিলিংয়ে রাতে থাকব, কারণ দার্জিলিং ও কালিম্পং—দুই জেলারই পর্যালোচনা বৈঠক করতে হবে। মিরিক দার্জিলিং জেলার অন্তর্গত। বৈঠক শেষে পরের দিন আমি উত্তরকন্যায় ফিরে আসব।’’
শুক্রবার কলকাতায় ফিরবেন, নিজেই জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ‘‘শুক্রবার আমি কলকাতায় ফিরব। সেদিন আমার পাঁচটি কালীপুজোর উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। এছাড়া, দুর্যোগের সময় যাঁরা প্রশংসনীয় কাজ করেছেন, যেমন সিভিল ডিফেন্স, দমকল বাহিনী-সহ অন্যান্যরা তাঁদের সম্মানিত করা হবে।’’
পাশাপাশি মমতা জানালেন, “আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান” কর্মসূচির অধীনে—যার বিস্তারিত প্রকাশের জন্য মুখ্যসচিবকে আমি প্রেস রিলিজ দিতে বলেছি (তবে আপনাদেরও জানাচ্ছি)—আমরা প্রতি বুথে ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দের পরিকল্পনা করেছিলাম, যার মোট মূল্য প্রায় ৮,০০০ কোটি টাকা। এই কর্মসূচি ৬ নভেম্বর পর্যন্ত চলার কথা ছিল, তবে দুর্যোগগ্রস্ত জেলাগুলিতে আধার ও অন্যান্য নথিপত্রের কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য এটি বাড়ানো হবে।’’
‘‘আমাদের লক্ষ্য ছিল মোট ৩১,৭০০ বুথভিত্তিক শিবির করা। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ২৮,৩০০টি শিবির সম্পন্ন হয়েছে, যা প্রায় ৯০%। প্রায় ২.৫ কোটি মানুষ এই শিবিরে উপস্থিত ছিলেন এবং ৩.৫৮ লক্ষ প্রকল্পের আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে ২.৮৪ লক্ষ প্রকল্প ইতিমধ্যেই পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। ১.৮৬ লক্ষ প্রকল্পের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং ১০০টি প্রকল্প ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ হয়েছে। আমরা মোট ৯৪.৭ লক্ষ আবেদন পেয়েছি, যার মধ্যে ৭৭.৪ লক্ষ (৮১%) প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। দুর্গত এলাকাগুলিতে অবশিষ্ট আবেদনগুলি নিষ্পত্তি করতে “আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান” শিবিরের সময়সীমা বাড়ানো হচ্ছে’’, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী।