মাদারিহাটের বিডিও অমিত চৌরাসিয়ার দফতরে ঢুকে এই কাণ্ড ঘটান উত্তেজিত বিজেপি সাংসদ৷ এই ঘটনায় স্বভাবতই বিজেপি সাংসদের আচরণ নিয়ে সরব হয়েছে তৃণমূল৷ ঘটনার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন বলে দাবি করেছেন মাদারিহাটের বিডিও৷
যদিও বিজেপি সাংসদ মনোজ টিগ্গার দাবি, মাদারিহাটের বিডিও বিজেপি পরিচালিত পঞ্চায়েত বা জনপ্রতিনিধিদের কোনও আবেদনেই কর্ণপাত করেন না৷ স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের সঙ্গেই ওঠাবসা তাঁর৷ এই ঘটনায় দলীয় সাংসদের পাশেই দাঁড়িয়েছেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য৷
advertisement
ঘটনাটি গত ২৯ অক্টোবরের৷ আচমকাই মাদারিহাটের বিডিও অমিত চৌরাসিয়ার দফতরে নিজের অনুগামীদের নিয়ে হাজির হন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ৷ শুরু থেকেই রাগে অগ্নিশর্মা ছিলেন তিনি৷ বিডিও-র দিকে আঙুল উঁচিয়ে চরম উত্তেজিত ভাবে তিনি বলতে থাকেন, ‘দলবাজি করলে তৃণমূলটাই করুন৷ আর বিডিও-র কাজ করলে সেটা ঠিক মতো করুন৷ কেন শুধু তৃণমূলের লোকজনের সঙ্গে গিয়ে আপনি ত্রাণের জিনিস, সরকারি ত্রিপল বিলি করছেন৷ আর বিজেপি-র লোকেরা কিছু চাইলেই বলবেন যে ত্রাণ সামগ্রী নেই৷ আমি আপনাকে কতবার ত্রাণ সামগ্রীর জন্য বলেছি? আপনি খালি বলেন যে জিনিস নেই৷ ১৮ লক্ষ মানুষ আমাকে ভোট দিয়েছেন, তাঁরা কেন কিছু পাবেন না? আমি একজন সাংসদ৷ আপনি আমাকে প্রাপ্য সম্মান দিয়েছেন?’
উত্তেজিত সাংসদকে বার বারই শান্ত হওয়ার জন্য অনুরোধ করেন বিডিও৷ যদিও তাঁর কোনও কথাই শোনেননি মনোজ টিগ্গা৷
পরে তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘মাদারিহাটের বিডিও নিজের দফতরকে তৃণমূলের পার্টি অফিস করে ফেলেছেন৷ সবসময় তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে উনি ওঠাবসা, খাওয়াদাওয়া করছেন, ত্রাণ বিলি করছেন৷ উনি একজন বিডিও৷ যে দলের মানুষই ওনার কাছে যাক না কেন, ওনার তাঁকে সাহায্য করা উচিত৷ কিন্তু উনি বিজেপি-র লোকজনকে দেখলেই তাঁদের এড়িয়ে চলেন৷ উনি যদি তৃণমূলটাই করতে চান, করুন৷ আমি তাই বলেছি আপনার অফিসটা তো এমনিতেই তৃণমূলের পার্টি অফিস হয়ে গিয়েছে, শুধু তৃণমূলের পতাকা লাগানো বাকি৷ আমি ওনাকে বলেছি আপনি তৃণমূল করলে করুন, কিন্তু বিডিও-র চেয়ারে বসে দলবাজি করবেন না৷’
মাদারিহাটের বিডিও অমিত চৌরাসিয়ার অবশ্য পাল্টা অভিযোগ, ‘উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে গন্ডগোল করতেই না জানিয়ে সাংসদ এসেছিলেন। ভিডিও রেকর্ড করে চলে গিয়েছেন। আমি কাজ করতে এসেছি। কারো সঙ্গে ঝগড়া করতে নয়।’
এই ঘটনায় অবশ্য দলীয় সাংসদের পাশেই দাঁড়িয়েছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য৷ মাদারিহাটের ঘটনায় তিনি বলেন, ‘সাংসদ দাদাগিরি করছেন না বিডিওকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, যে তিনি তৃণমূলের দালালি করছেন৷’
যদিও তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের অভিযোগ, ‘মনোজ টিগ্গা গুন্ডামি করছেন। দলের কাছে নম্বর বাড়াতে এসব করেছেন। নিজেকে সানি দেওলের মতো দেখিয়ে ফটোশ্যুট করতে চাইছিলেনয। এটাই বিজেপির সংস্কৃতি।’
