এনডিটিভি-তে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই ১৩ জনের মধ্যে ইতিমধ্যেই রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করতে গিয়ে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে৷ আহত অবস্থায় কোনওক্রমে প্রাণে বেঁচে ভারতে ফিরে এসেছেন আরও দু জন৷ কিন্তু বাকি ৮ জন এখনও নিখোঁজ৷
আরও পড়ুন: ৫ মাসের যুদ্ধ শেষের পথে যুদ্ধবিরতি ইজরায়েল-গাজায়, শুরু বন্দি প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়া
advertisement
আজমগড়ের বাসিন্দা কানাইয়া যাদব এবং মাউ জেলার দুই বাসিন্দা শ্যামসুন্দর যাদব এবং সুনীল যাদব রুশ সেনার হয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন৷ আজমগড়ের বাসিন্দা রাকেশ যাদব এবং মাউ জেলার ব্রিজেশ যাদব যুদ্ধক্ষেত্রে আহত হয়ে বর্তমানে নিজেদের বাড়িতেই রয়েছেন৷ কিন্তু বিনোদ যাদব, যোগেন্দ্র যাদব, অরবিন্দ যাদব, রামচন্দ্র, আজহারউদ্দিন খান, হুমেশ্বর প্রসাদ, দীপক কুমার এবং ধীরেন্দ্র কুমারের মতো আরও আট জনের কোনও খবরই জানে না তাঁদের পরিবার৷
যোগেন্দ্র যাদব নামে রাশিয়ায় গিয়ে নিখোঁজ এক যুবকের পরিবারের অভিযোগ, মাউ জেলারই এক এজেন্ট নিরাপত্তা রক্ষীর কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যোগেন্দ্রকে রাশিয়ায় পাঠায়৷ কিন্তু সেখানে পৌঁছনোর পর জোর করে যোগেন্দ্রকে রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে যুদ্ধ করতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়৷ গত বছরের মে মাসে শেষ বার যোগেন্দ্রর সঙ্গে তাঁর পরিবারের ফোনে কথা হয়৷ তখনই যোগেন্দ্র জানান, যুদ্ধ করতে গিয়ে আহত হয়েছেন তিনি৷ এর পর থেকে আর যোগেন্দ্রর সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করতে পারেনি তাঁর পরিবার৷
একই অভিযোগ আজমগড়ের বাসিন্দা নিখোঁজ আজহারউদ্দিন খানের মায়েরও৷ তিনিও বিনোদ নামে ওই একই এজেন্টের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন৷ তাঁর অভিযোগ, ওই এজেন্টই আজহারউদ্দিনকে রাশিয়ায় নিরাপত্তারক্ষীর কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পাঠিয়েছিল৷ মাসে ২ লক্ষ টাকা বেতনের প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়৷ কিন্তু রাশিয়ায় পৌঁছনোর পর আজহারউদ্দিন ফোনে তাঁর মাকে জানান, যুদ্ধ করার জন্য তাঁকে প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে৷ প্রথম প্রথম ফোনে কথা হলেও গত দশ মাস ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি আজহারউদ্দিনের মা৷
ছেলেকে রাশিয়ায় গিয়ে যুদ্ধ করতে হচ্ছে শোনার পর গত বছরের ১ এপ্রিল হৃদরোগে আক্রান্ত হন আজহারের পরিবার৷ কয়েকদিন বাদেই মৃত্যু হয় তাঁর৷ নিখোঁজ বাকি যুবকদের পরিবারেরও একই অভিযোগ৷
রাশিয়া থেকে আহত হয়ে ফিরে আসা রাকেশ যাদব বলেন, ‘গত বছর জানুয়ারি মাসে আমরা রাশিয়া পৌঁছনোর পর একটি চুক্তিপত্রে সই করানো হয়৷ সেই চুক্তিপত্র রুশ ভাষায় লেখা ছিল৷ চুক্তিপত্রে কী আছে জানতে চাইলে বলা হয়, কী কাজ করতে হবে কাগজে সেটাই লেখা আছে৷ কিন্তু এর পরই আমাদের রকেট, বোমা মারার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়৷ আমরা আপত্তি করলে বলা হয়, আত্মরক্ষার জন্য এসব প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে৷’ রাকেশের দাবি, বিনোদ নামে ওই ভারতীয় দালালও রাশিয়ায় আটকে পড়েছেন৷
শনিবারই ভারতের বিদেশমন্ত্রক জানায়, রুশ সেনার হয়ে ইউক্রেনেরব বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়ে ১২ জন ভারতীয়ের মৃত্যু হয়েছে৷ নিখোঁজ আরও ১৬ জন৷ এখনও পর্যন্ত রাশিয়ার হয়ে ভারতীয়দের যুদ্ধ করতে যাওয়ার ১২৬টি ঘটনা বিদেশমন্ত্রক জানতে পেরেছে৷