২০২০ শেষ (Yearender 2020) হতে আর বাকি মাত্র ক'দিন। ২০২০ প্রিয়জনের সঙ্গেই সঙ্গেই কেড়ে নিয়েছে দেশের বহু নেতা-মন্ত্রীকেও। যাঁদের অবদান ভারতীয় রাজনীতিতে অস্বীকার করার মতো নয়। ফিরে দেখা যাক এমনই কিছু রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্বকে, যাঁরা চিরনিদ্রার দেশে চলে গিয়েছেন ২০২০ সালে।
প্রণব মুখোপাধ্যায় (Pranab Mukhopadhyay)
বাথরুমে পড়ে চোট লাগে মাথায়। রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ায় ভরতি করা হয় দিল্লির সেনা হাসপাতালে। সেখান থেকে দীর্ঘ লড়াই। রাজনীতির ময়দানে বিপরীত পক্ষকে চ্যালেঞ্জ দেওয়ার মতোই চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলেন করোনাকেও। করোনা (Coronavirus) আক্রান্ত হওয়ার পরও লড়াই জারি রেখেছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। মাথায় অস্ত্রোপচার করে রক্তও বের করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। কোমায় চলে যান তিনি। তাঁর শরীরের ভাইটাল প্যারামিটারগুলি ঠিক থাকলেও ১৯ অগস্ট লাং ইনফেকশন শুরু হয়। ৩১ অগস্ট, ৮৪ বছর বয়সে ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি (২০১২-২০১৭), ভারতরত্ন প্রণব মুখোপাধ্যায় সকলকে ছেড়ে চলে যান। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস, ভারতীয় রাজনীতি এবং প্রশাসনিক ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা অনস্বীকার্য।
advertisement
রাম বিলাস পাসওয়ান (Ram Vilas Paswan)
কিছু দিন আগেও সুস্থই ছিলেন তিনি। হঠাৎ হৃদরোগে সমস্যা হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত হয়। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাম বিলাস পাসওয়ান ভরতি হন হাসপাতালে। অস্ত্রোপচারের পর থেকেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। ৮ অক্টোবর ৭৪ বছর বয়সে প্রয়াত হন রাম বিলাস পাসওয়ান। তাঁর ছেলে চিরাগ পাসওয়ান তাঁর মৃত্যুর খবর সকলকে জানান। ১০ অক্টোবর তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় বিহারে।
আহমেদ পটেল (Ahmed Patel)
সনিয়া গান্ধির আপ্তসহায়ক, কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা ও সাংসদ আহমেদ পাটেল করোনা (Covid 19) আক্রান্ত হন কিছুদিন আগে। চিকিৎসকের পরামর্শে ভরতি হন মেদান্ত হাসপাতালে। সেখানেই তাঁর চিকিৎসা চলছিল। চিকিৎসায় সাড়াও দিচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। ২৫ নভেম্বর ৭১ বছর বয়সে মাল্টিঅরগ্যান ফেলিওরে মৃত্যু হয় তাঁর। তাঁর ছেলে ফয়জল বাবার মৃত্যু সংবাদ ট্যুইট করে জানান।
তরুণ গগৈ (Tarun Gogoi)
অসমের জনপ্রিয় নেতা। অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ করোনা আক্রান্ত হন অগস্টের ২৬ তারিখ। প্লাসমা দেওয়া হয় তাঁকে। সুস্থও হয়ে ওঠেন তিনি। হাসপাতাল থেকে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয় এর দু'সপ্তাহ পরই। কিন্তু করোনা সেরে গেলেও একাধিক কোমর্বিডিটি ভোগাচ্ছিল তাঁকে।
দ্বিতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন গুরুতর ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন এই জননেতা। একাধিক হার্ট সার্জারি হয় তাঁর সেই সময়। দীর্ঘ দিন বিশ্রামের পর ফের তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন। কিন্তু শারীরিক অবস্থা তেমন ভালো ছিল না তাঁর।
কংগ্রেসের এই জনপ্রিয় নেতা করোনা-পরবর্তী একাধিক সমস্যায় ভুগতে ভুগতে ২৩ নভেম্বর মারা যান। তাঁর মৃত্যুতে কাঁদে গোটা অসম। তাঁর মতো একজন নেতা ছেড়ে চলে যাওয়ায় গভীর শোকপ্রকাশ করেন সমস্ত রাজনৈতিক নেতারা।
অমর সিং (Amar Singh)
প্রাক্তন সমাজবাদী পার্টি লিডার (Samajwadi Party) ও রাজ্যসভার সাংসদ অমর সিংয়ের জন্ম হয় ১৯৫৬ সালে আজমগড়ে। তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ার বরাবরই উজ্জ্বল ছিল। একাধিক বলিউড সেলেবের সঙ্গে কার্যত ওঠাবসা ছিল তাঁর। কংগ্রেসের দুঃসময়ে নিজের পার্টির হয়ে হাল ধরেছেন তিনি। কিন্তু জয়াপ্রদার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা সামনে আসলে দলবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ ওঠে তাঁর উপরে। তাঁকে বহিষ্কার করা হয় দল থেকে। ২০১১ সালে তিনি রাষ্ট্রীয় লোক মোর্চা তৈরি করেন।
১ অগস্ট কিডনি ফেলিওরে সিঙ্গাপোরে তাঁর মৃত্যু হয়।
লালজি ট্যান্ডন (Lalji Tandon)
দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন মধ্যপ্রদেশের রাজ্যপাল লালজি ট্যান্ডন। ভরতি ছিলেন মেদান্ত হাসপাতালে। ২১ জুলাই সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।