খবর বলছে যে জসমিন সেরেব্রাল পালসি রোগে আক্রান্ত। স্নায়ুর এই রোগে শরীরের সমস্ত পেশি কঠিন হয়ে আসে, সামান্য নড়াচড়াতেও সমস্যা তৈরি হয়। তাই অনেক বছর হয়ে গেল জসমিনার নিজের জীবন হুইলচেয়ারে বন্দি। সেই হুইলচেয়ার নিয়ে বেড়ানো কিছুটা হলেও সমস্যার তো বটেই! কিন্তু সেই প্রতিবন্ধকতাও জয় করেছিলেন প্রাণবন্ত জসমিনা। সারা দিন হুইলচেয়ার চালিয়ে হাজার একটা কাজ সারছেন তিনি, সেখানে বৈকালিক ভ্রমণেই বা সমস্যা কী?
advertisement
নির্মম হলেও সত্যি এটাই যে সমস্যাটা শেষ পর্যন্ত গড়িয়েছে সরকারি খাতে। শহরে হুইলচেয়ার নিয়ে ঘোরাফেরার মতো ফুটপাথ কই? যদি বা থাকেও, তা হয় দখল করে রেখেছেন হকাররা! নয় তো মানুষে সেটা আবর্জনায় ভরিয়ে রেখেছে, সংবাদমাধ্যমকে নিজের ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন জসমিনা।
তার সঙ্গেই জানিয়েছেন খুশির খবরটাও। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তিনি যেমন জয় করেছেন, তেমনই এবার জয় করতে চলেছেন প্রশাসনিক অকর্ম্যণতার বাধাও। ফিজিওথেরাপিস্ট এবং পুরনো বন্ধু সঙ্কেত খড়িলকরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে মুম্বইয়ের এক আইটি ফার্মের এই ইঞ্জিনিয়ার খুলে ফেলেছেন এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। বৃহৎ মুম্বই পৌরসভার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে জসমিনা এবং সঙ্কেতের অলাভজনক সংস্থা অ্যাকসেস টু হোপ এবার মুম্বই জুড়ে ফুটপাথ বানাবে। যেখান দিয়ে স্বচ্ছন্দে হুইলচেয়ারে করে ঘুরতে পারবেন বিশেষ ভাবে সক্ষমরা।
আপাতত মুম্বইয়ের হনুমান রোড আর নেহরু রোডে তাঁদের ফুটপাথ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। এই প্রকল্পে তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন আর্কিটেক্ট পারুল কুমথা। তিনি জানিয়েছেন যে অটিস্টিক সন্তানকে নিয়ে পথে বোরোনোর সময়ে তিনিও মুম্বইয়ে যথোপযোগী ফুটপাথ না থাকার বিষয়টি মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেন। আপাতত তাই ত্রয়ীর ইচ্ছার রঙে তৈরি হচ্ছে শহরের দুই এলাকার ফুটপাথ। তাঁদের প্রত্যাশা- এই প্রকল্পের অধীনে সারা মুম্বই জুড়ে এমন অজস্র ফুটপাথ তৈরি করা সম্ভব হবে।