বাংলায় ভোটের লড়াইয়ে নিরিখে গত আড়াই দশকের বেশি সময় প্রধান শত্রু বলে বিবেচিত ছিল সিপিএম এবং তৃণমূল। কিন্তু শেষ তিনবার সিপিএম-কে বিধানসভা ভোটে তৃণমূল শুধু পরাস্তই করেনি, ২০২১ সালের বিধানসভা বামশূন্য করে ছেড়েছে ঘাসফুল শিবির। ভোটের আগে তৃণমূল এবং বিজেপিকে একাসনে রাখলেও এখন পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেই বাম নেতাদের গলায় ঘনঘন ভিন্ন সুর শোনা যাচ্ছে। সম্প্রতি বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু শোরগোল ফেলে বলে দিয়েছেন, বিজেপি বিরোধী আন্দোলনে যে কারও সঙ্গে জোট বেঁধে কাজ করতে প্রস্তুত দল। এমন মন্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক মহল স্পষ্টই বলছে, ২০২৪-এ বিজেপি বিরোধী জোটে যে বামেরা প্রত্যক্ষ ভাবে অংশ নিতে চায় তা-ই আসলে বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন বিমান বসু। আর এই পরিস্থিতিতে মানিক সরকারও বুঝিয়ে দিচ্ছেন, তিনিও পিছপা নন, অন্তত বিজেমূল তত্ত্বের প্রবক্তা তো ননই।
advertisement
বলাই বাহুল্য ত্রিপুরাকে এবার পাখির চোখ করেছে তৃণমূল। প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাক ইতিমধ্যেই আদাজল খেয়ে নেমেছে। ত্রিপুরার জমি জরিপ করতে দিনরাত ঘুরছেন আইপ্যাকের প্রতিনিধিরা। তৃণমূলের সঙ্গে গাঁটছড়া প্রসঙ্গে মানিক সরকার বলেছেন, "গণতন্ত্রের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে তৃণমূল আন্দোলন সংগ্রাম ও সংগঠন করে। তাদের সংগঠন করতে আমরা আগে কখনো এই রাজ্যে বাধা দেয়নি তারা তাদের মত কাজ করেছে ভোটে দাঁড়িয়েছে। জয়-পরাজয়ের প্রশ্ন অন্য।" তাঁর কথায়, "ত্রিপুরায় তৃণমূলের আসাটা নতুন কিছু নয়। পশ্চিমবঙ্গে তাদের মূল শক্তি হলেও তারা নানা জায়গায় ছড়াবার চেষ্টা করছেন।"
যখন প্রবীণ বামনেতা বিমান বসুর মতো মানিক সরকারকেও দেখা যাচ্ছে স্থিতিস্থাপক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরতে ঠিক তখনই ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে অন্য মত পোষণ করছেন সুজন চক্রবর্তী। তাঁর মতে, "ত্রিপুরায় বিজেপি হারবে এবং বামপন্থীরা জিতবে এমন পরিস্থিতি তৈরি হতেই বামপন্থীদের নির্মূল করতে ত্রিপুরায় গিয়ে হাজির হয়েছে তৃণমূল।"
হাল আমলে বামেদের মতানৈক্য বারবার প্রকট হয়েছে। আগামী দিনে ত্রিপুরায় তৃণমূলের উপস্থিতি এই মতপার্থক্যকে আরও প্রবল করে তুলবে তা নিঃসংশয়ে বলা যায়।