বিতর্ক এবং বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বোধহয় এওকই মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ। একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য, শিক্ষক-ছাত্রদের একাংশের সঙ্গে বিরোধ এবং শেষ পর্যন্ত নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের সঙ্গে জমি তরজায় জড়ানো। তালিকার বোধহয় কোনও শেষ নেই। এবার আবারও বেফাঁস মন্তব্য করে বিতর্ক ডেকে আনলেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।
আরও পড়ুন: সাংসদ হিসাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছিলেন বলেই ছাঁটা হয়েছিল ডানা, আবারও বিস্ফোরক দাবি শুভেন্দুর
advertisement
প্রথামতো, বুধবার সকালে শান্তিনিকেতনের উপাসনালয়ে ব্রহ্ম উপাসনার প্রার্থনা পর্বে যোগ দিয়েছিলেন ছোট ছোট পড়ুয়ারা। উপস্থিত ছিলেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীও। প্রার্থনা শেষে ,তাঁকে বলতে শোনা যায়, "বিশ্বভারতী সেই হাঁস, যে সোনার ডিম দেয়। ডিমের প্রতি আগ্রহ আছে। কিন্তু তার লালন পালন করব না। সেই আবেগ আমার নেই। আমি শুধু দেখব বিশ্বভারতী থেকে কতটা পেতে পারি। শুধু সোনার ডিমের ভাগ চাই। দেখব,সেই সোনার ডিমের কতটা পেতে পারি। তাকে লালনপালন করার কোনও আগ্রহ নেই।" এর মাধ্যমে আসলে উপাচার্যের ইঙ্গিত, সকলেই বিশ্বভারতী থেকে নিজের স্বার্থ আদায় করতে তৎপর থাকে, অথচ, এই কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে নজর দেয় না কেউ-ই।
বিশ্বভারতীর রবীন্দ্র স্মৃতি জর্জরিত উপাসনালয়। অধ্যাপক, ছাত্রছাত্রী থেকে আবাসিক, প্রত্যেকের কাছেই যেখানে একসময় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে একাসনে বসে উপাসনা করতেন, সেখানেই এমন রাজনৈতিক ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য কেন করলেন উপাচার্য? সেই প্রশ্ন তুলেই সরব হচ্ছেন আশ্রমিক এবং অধ্যাপকদের একাংশ।
আরও পড়ুন: সাগরদিঘি উপনির্বাচনে সংখ্যালঘু ভোটকেই হাতিয়ার করতে চাইছে বিজেপি
এ নিয়ে তৃণমূলনেতা সুখেন্দুশেখর রায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "বিশ্বভারতীকে কেন্দ্রীয় শাসকদলের আখড়াতে পরিণত করেছে যাঁরা, তাঁরা আর কী মন্তব্য করবেন। বিশ্বভারতীর পরিবেশ কলুষিত করছেন উনি। উনি তো পরিষ্কার বলেন, উনি কেন্দ্রীয় শাসকদলের অনুগামী। রবীন্দ্র ভাবধারার অনুগামী উনি নন। ওখানে এক অরাজক পরিবেশ তৈরি করে রেখেছেন। আমার নিন্দা জানানোর কোনও ভাষা নেই।"
বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্যের অবশ্য বক্তব্য। মুখ্যমন্ত্রী যে ভাবে শান্তিনিকেতনে গিয়ে উপাচার্যকে আক্রমণ করছেন, তাতে তো উপাচার্যের প্রতিক্রিয়া দেওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু, পাশাপাশি তিনি বলেন, "আমরা চাই, বিশ্বভারতী সবরকমের রাজনীতির ঊর্ধ্বে থাকুক।"