মাত্র ২৭ বছর বয়সেই বহু প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে এগিয়ে চলেছেন পিঙ্কি৷ অবশ্য, শুরু থেকে পরিস্থিতি এমনটা ছিল না৷ বিয়ের পরপর সবকিছু ঠিকই ছিল৷ পর পর দুই মেয়ের মা হলেন পিঙ্কি৷ কিন্তু জীবনের ছন্দ পাল্টালো কয়েক বছর আগে। হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়লেন স্বামী। আচমকাই দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে যায় ভুবনেশ গারোলার৷ সুস্থ করে তুলতে নিজের একটি কিডনি স্বামীকে দিয়ে দেন পিঙ্কি৷ কিন্তু তাও শেষ রক্ষা হল না৷ কয়েকদিনের মধ্যে দুই সন্তান আর স্ত্রীকে ফেলে চলে গেলেন পিঙ্কি গারোলার স্বামী৷ এরপরই পুরো পরিবারের দায়িত্ব একা পিঙ্কির কাঁধে৷
advertisement
নেই একটি কিডনি। শারীরিক অসুস্থতা তাই লেগেই থাকে পিঙ্কির৷ চিকিৎসার জন্য ছুটতে হয় দেরাদুন৷ কিন্তু তার মাঝেও পরিবারের ওপর নিজের সমস্ত দায়িত্ব পালন করে চলেছেন পিঙ্কি৷ দুই মেয়ের সঙ্গে তাঁর বয়স্ক শ্বশুর মশাইও তাঁরই দায়িত্বে যে! হার মানলে চলবে কী করে? শ্বশুর মশাইয়ের ছোট্ট দোকান। ব্যবসার পথ বেছে নিয়েছেন পিঙ্কিও৷ বাড়িতেই নিজের দোকান খুলেছেন৷ মহিলাদের সাজগোজের সরঞ্জামের পাশাপাশি ঝাড়বাতি-সহ গৃহস্থালির টুকিটাকি নিয়ে দোকান চালাচ্ছেন পিঙ্কি৷
সঙ্গে ম্যাক্রেম সুতো দিয়ে ঝুড়ি, গণেশ, ঝাড়বাতি, তোড়া তৈরির কাজও করেন পিঙ্কি৷ প্রায় দু-তিন বছর ধরে এই কাজ করে আসছেন পিঙ্কি৷ এমনকি গ্রামের ৫-৬ জন মেয়েকে ম্যাক্রমের কাজও শিখিয়েছেন পিঙ্কি নিজে৷
আরও পড়ুন: রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া মেয়ে পেল ইতালিয়ান বাবা-মা'কে, ঘটনাটি শুনলে চোখে জল আসবে
কীভাবে নিজে একাই শিখলেন এই ম্যাক্রেম সুতোর কাজ? পিঙ্কি বললেন তিনি শুধুমাত্র ইউটিউবে ভিডিও দেখে ম্যাক্রামের কাজ শিখেছেন৷ দু'চোখে একটাই স্বপ্ন পিঙ্কির, দুই মেয়েকে উচ্চশিক্ষিত করে তুলতে চান এই লড়াকু মা৷ অসুস্থতাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অদম্য জেদ আর স্বপ্ন নিয়েই তাই এগিয়ে চলছেন এই একরোখা নারী।