কিংবদন্তি অনুসারে, উদয়পুরের একজন মহারাণার দরবারে নৃত্য এবং শিল্পের বিশেষ গুরুত্ব ছিল। দূর-দূরান্তের গ্রাম থেকে শিল্পীরা এখানে তাঁদের কৃতিত্ব পরিবেশনা করতে আসতেন। সেরকমই একদা দরবারে এসেছিলেন এক নটিনী। তিনি মহারাণার কাছে একটি চমকপ্রদ প্রস্তাব রেখেছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে, যদি তিনি দড়ির সাহায্যে পিচোলা হ্রদ পার হতে সফল হন, তাহলে তাঁকে পুরস্কার হিসেবে অর্ধেক রাজ্য দিতে হবে। মহারাণা এই প্রস্তাব গ্রহণ করেন।
advertisement
ভয়ে দড়ি ছিঁড়ে দেওয়া হয়, হ্রদে ডুবে মৃত্যু –
নটিনী হ্রদের এক প্রান্তে একটি দড়ি বেঁধে তার উপর দিয়ে নাচতে নাচতে হ্রদ পার হতে শুরু করেন। তিনি যখন হ্রদের প্রায় অর্ধেক পার হয়ে গিয়েছিলেন, তখন মহারানার ভৃত্যরা ভয় পেতে শুরু করেন যে তিনি যদি সফল হন, তাহলে রাজাকে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তাঁর রাজ্যের অর্ধেক দান করতে হবে। এই ভয়ে ভৃত্যরা দড়ি কেটে ফেলেন। নটিনী সোজা পিচোলার গভীরে পড়ে মারা যান।
শহরে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ার পর নটিনী চবুতরা তৈরি করা হয় –
এর পরে, এক অজানা ভয় পুরো শহরকে গ্রাস করে। রাজা এবং প্রজা উভয়কেই অশান্তির সম্মুখীন হতে হয়। পণ্ডিতরা এই নিদান দেন যে, নটিনীর আত্মা তখনই শান্তি পাবে যখন তার স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হবে। এর পরে, হ্রদের মাঝখানে নটিনী চবুতরা নির্মিত হয়েছিল।
রাতের বেলায় এখনও ঘুঙুরের শব্দ শোনা যায় –
স্থানীয়রা দাবি করেন যে আজও রাতে হ্রদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় ঘুঙুরের শব্দ শোনা যায়। কিছু লোক দড়িতে হ্রদ পার হতে থাকা একটি অস্পষ্ট মূর্তিকেও দেখেছেন। এই রহস্যময় এবং ভয়ঙ্কর গল্পটি এখনও উদয়পুরে আসা পর্যটকদের রোমাঞ্চিত করে। গল্পটি সত্য না কি কেবল একটি লোককাহিনী তা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়, তবে নটিনী চবুতরা এখনও এই গল্পের সাক্ষী হিসেবে পিচোলা হ্রদের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে।